জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতা দিবসে আলোচনা সভা

বাংলাদেশে ১১ জানুয়ারি চতুর্থবারের মতো পালিত হয়েছে জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতা দিবস। জানুয়ারির দ্বিতীয়

শনিবার ‘মার্চ ফর মাদার’ নামে মোর্চার উদ্যোগে এ দিবসটি পালিত হয়। এছাড়া এ মাসটি বিশ্বে জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতা মাস হিসেবেও উদ্যাপিত হয়।

২০২০ সালে এ উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর উদ্বোধন হয় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে চাই সামাজিক আন্দোলন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার মধ্য দিয়ে। দেশের খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ, ক্যানসার ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ আলোচনায় অংশ নেন।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আপনার কিশোরী কন্যাসন্তানকে এইচপিভি টিকা দিন’।

ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে নারী ক্যানসার রোগীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের পরে জরায়ুমুখের ক্যানসারের অবস্থান। প্রতি বছর এ রোগে গড়ে আট হাজার ৬৮ নারী নতুন করে আক্রান্ত হন, যা ক্যানসারে আক্রান্ত নারী রোগীদের প্রায় ১২ ভাগ। আর মৃত্যুবরণ করেন প্রায় পাঁচ হাজার ২১৪ রোগী।

আলোচনায় বক্তারা দুটি বিষয়ে জোর দেন এবং এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ কামনা করেন:

এক.

প্রাথমিক প্রতিরোধের জন্য জরুরি হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) ভ্যাকসিন দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। আমদানিকারক একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে, অন্যটির আমদানি বেশ কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। একাধিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ ভ্যাকসিন সহজলভ্য করার ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। সরকার আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা অেঠও-এর সহযোগিতায় গাজীপুরে ৩৩ হাজার কিশোরীকে বিনা খরচে টিকা দিয়েছে। এ পাইলট প্রজেক্টটির মূল্যায়নের পর পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সম্প্রসারিত করার কথা, তবে এর অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়।

দুই.

ক্যানসার স্ক্রিনিং কর্মসূচি নানা পর্যায়ের ৪০০ সরকারি হাসপাতালের ভায়া সেন্টারে চালু রয়েছে। তবে তা অসংগঠিত ও হাসপাতালকেন্দ্রিক। একে সমাজভিত্তিক সংগঠিত রূপ না দিলে ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের এর আওতায় আনা সুদূরপরাহত থেকে যাবে। এর বাইরে সরকারি-বেসরকারি কিছু চোখে পড়ছে, এটা আশার কথা। তবে সঠিক পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি জাতীয় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার আওতায় জাতীয় ক্যানসার স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম এখন সময়ের দাবি, যা হবে সমাজভিত্তিক, সংগঠিত ও সম্পূর্ণ।

সভায় বক্তারা বলেন, কেবল সরকারের দায়িত্বই নয়, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যান্য অংশীজনসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে সমন্বিত প্রচেষ্টায় ক্যানসার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি ঘটানো সম্ভব।

গোবটেবিল আলোচনার সঞ্চালক ছিলেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের ক্যানসার ইপিডেমিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার। আলোচনায় অংশ নেন স্বাস্থ্যবিষয়ক লেখক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাবেরা খাতুন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফাতেমা আশরাফ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মালা বণিক, ঢাকা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের ডা. দিলরুবা দেরদৌস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই’র সাবেক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. তাজুল বারী, এটিএন বাংলার নিউজ এডিটর ও কমিউনিটি অনকোলজি ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সম্পাদক নাদিরা কিরণ ও মার্চ ফর মাদার মোর্চার বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।

        ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন

        প্রধান সমন্বয়কারী- মার্চ ফর মাদার ও

সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান- ক্যানসার ইপিডেমিওলোজি বিভাগ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটউট ও হাসপাতাল

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০