জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-২৬’ শুরু আজ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: জলবায়ুবিষয়ক সবচেয়ে বড় সম্মেলন ‘কপ-২৬’ শুরু হচ্ছে আজ। স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোতে স্থানীয় সময় আজ রোববার শুরু হবে ১৩ দিনের এ বৈশ্বিক সম্মেলন। বিশ্বের ১২০ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানসহ ২০০ দেশের প্রতিনিধি, বিজ্ঞানী, নাগরিক প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সম্মেলন চলবে আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে সম্মেলনের সাফল্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে চীন এখনও জাতীয় পরিকল্পনা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রও প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ সিনেটে পাস করাতে পারেনি। যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও কানাডা নতুন যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, তা প্রত্যাশা পূরণে যথেষ্ট নয়। খবর: বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স।

এদিকে সম্মেলন শুরুর বেশ আগে থেকেই পরিবেশবিদরা সম্মেলনের কাক্সিক্ষত সাফল্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসছেন। কারণ এবারের সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনা। এজন্য অন্তত ৪৫ শতাংশ কার্বন নির্গমন হ্রাস করতে হবে। যা কার্যত ধনী দেশগুলোকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে তারা করবে বলে মনে হচ্ছে না। অন্যদিকে সম্মেলনের আগে দিয়ে জলবায়ু ধ্বংসের পেছনে অর্থ না ঢালতে ব্যাংকগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন সুইডিশ জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থানবার্গ।

সম্মেলনে খালি হাতেই যাচ্ছেন বাইডেন? এদিকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিরেট কোনো প্রস্তাব সম্মেলনে পেশ করতে পারবেন না বাইডেন। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় আর্থিক বরাদ্দ পেতে প্রস্তাবিত একটি আইন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের একাংশের সমর্থন পায়নি। ফলে রোববারের আগে ওই আইন পাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার জলবায়ু সংকট মোকাবিলার জন্য বিল্ড ব্যাক বেটার আইনের প্রস্তাবনা আনেন বাইডেন। এ আইনে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এক দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ অর্থ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র আগামী দশকের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ অন্তত ৫০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য অর্জন করতে চাইছে বলে জানিয়েছিল হোয়াইট হাউস।

তবে ডেমোক্র্যাটদের মতবিরোধের কারণে ওই আইন স্থানীয় সময় রোববারের আগে পাস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আইনটি পাস হলে জলবায়ু সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে পারতেন বাইডেন।

এর আগে জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসি) নির্বাহী সম্পাদক প্যাট্রিসিয়া এসপিনোসা সতর্ক করে বলেছেন, এ সম্মেলনের ব্যর্থতা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ভেঙে পড়তে পারে বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা।

জলবায়ু ‘ধ্বংসে’ অর্থ না ঢালতে গ্রেটার আহ্বান: এদিকে জাতিসংঘের ‘কপ২৬’ জলবায়ু সম্মেলনের আগে দিয়ে জলবায়ু ধ্বংসের পেছনে অর্থ না ঢালতে ব্যাংকগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন গ্রেটা থানবার্গ। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পগুলোতে তহবিল সহায়তা বন্ধের দাবি নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হতে লন্ডনে অবস্থান করছেন সুইডিশ এ কিশোরী জলবায়ুকর্মী।

স্থানীয় সময় শুক্রবার বিবিসি’র এন্ড্র– মার শো তে গ্রেটা বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হতে থাকলে জলবায়ু সম্মেলনে পরিবর্তন আসা সম্ভব।’

গ্লাসগোয় জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে বিশ্বনেতারা সেখানে সমবেত হওয়ার মধ্যেই জলবায়ুকর্মীরা জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের বিরোধিতা করে বিক্ষোভের আয়োজন করেছে। শুক্রবার নিউইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকো এবং নাইরোবিসহ বিশ্বজুড়েই অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিক্ষোভ হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় লন্ডনেও বিক্ষোভ হয়।

জলবায়ু কর্মীরা কয়লা, গ্যাস এবং তেলের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা বিভিন্ন কোম্পানি এবং প্রকল্পে ঋণ না দেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছে।

সম্মেলনের এ সময়ে বিক্ষোভে অংশ নিতে গ্লাসগো সফরে যাওয়ার বিষয়টি এ সপ্তাহেই নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন গ্রেটা। তবে সম্মেলনে তাকে বক্তব্য রাখতে বলা হয়েছে কি নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে গ্রেটা জানান, ‘আমি জানি না। সেটি একেবারেই স্পষ্ট নয়। আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের মতো কিছু নেই।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০