শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে দাঁড়ালেও এখনও প্রায় ৬১ শতাংশ মার্কিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি বড় সমস্যা বলে মনে করে এবং তারা চায় সরকার এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করুক। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ইউনিভার্সিটির এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ইপিআইসি।
গবেষণায় দেখা যায়, ৪৩ শতাংশ সরকারদলীয় রিপাবলিকান ও ৮০ শতাংশ বিরোধীদলীয় ডেমোক্র্যাটিক রাজনীতিবিদসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৭২ শতাংশ নাগরিক জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে বলে বিশ্বাস করে। যদিও খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে ‘ভাঁওতাবাজি’ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই অন্যায্য একটি চুক্তি।
গবেষণার প্রধান সমন্বয়কারী ট্রেভর টমসন বলেন, অধিকাংশ ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান সদস্য চায় জলবায়ু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ঐকমত্য থাকা।
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৮৮টি দেশের ঐকমত্যে ২০১৫ সালে প্যারিসে ওই জলবায়ু চুক্তি হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি এমন পর্যায়ে বেঁধে রাখার উদ্যোগে নেওয়া হবে, যাতে তা প্রাক-শিল্পায়ন যুগের চেয়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না হয়।
শিকাগো ইউনিভার্সিটির ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়, প্রতি ১০ জন রিপাবলিকান সমর্থকের মধ্যে সাতজন এবং প্রায় সব ডেমোক্র্যাটিক সমর্থক জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে বলে বিশ্বাস করেন এবং তারা মনে করেন, সরকারের এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রধান কৌশল কী হওয়া উচিত এমন প্রশ্নের জবাবে গবেষণায় বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারী বলেন, তারা ‘ক্লিন পাওয়ার প্লান্ট’ পরিকল্পনা প্রত্যাহার এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরোধী।
গবেষকদের একজন ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অধ্যাপক মিশেল গ্রিনস্টন বলেন, এ গবেষণার ফল জলবায়ু কৌশল নিয়ে বিতর্কের চলমান অচলাবস্থার দ্রæত অবসান ঘটাবে এবং সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাব্য পথ সম্পর্কে দিকনির্দেশনাও দেবে।
যদিও বেশিরভাগ আমেরিকান কার্বন নিঃসরণ কমাতে সহায়ক কৌশল গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন, তবে ব্যক্তিগতভাবে তারা এজন্য কী পরিমাণ অর্থ খরচ করতে রাজি আছেন সেটি একটি বড় প্রশ্ন. কারণ অর্ধেক আমেরিকানই এজন্য নিজের পকেট থেকে এক ডলারও খরচ করতে রাজি নন। আর মাত্র ১৮ শতাংশ মাসে ১০০ ডলার খরচ করতে রাজি আছেন।
গত ১৭ আগস্ট এবং ২১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যে এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ায় প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। গবেষণায় এক হাজার ৩৮ জন তথ্য প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জলবায়ুবিষয়ক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়। অন্যদিকে চীনসহ অন্যান্য দেশ জলবায়ুর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তের ফলে তার বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা পদত্যাগও করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিকাগো ইউনিভার্সিটি জলবায়ু বিষয়ে সরকারের ভূমিকা নিয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।