Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:40 pm

জলাবদ্ধতা নিরসনে ২৮০০ কোটি টাকার প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকাকে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্ণফুলী নদীর তীরে দেয়াল নির্মাণ, ২৫টি খাল ড্রেজিং ও খালের মুখে পাম্প হাউজসহ সøুইস গেট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং এর কিছু কিছু কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার চসিকের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ২১তম সাধারণ সভায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এসব কথা জানান। সভায় নির্বাচিত পরিষদের সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, অফিসিয়াল কাউন্সিলরসহ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে নগরীকে শতভাগ আলোকিত করার অংশ হিসেবে সোলার ও নন-সোলার প্রকল্পের অধীনে প্রায় ২৮ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সোলারের আওতায় ২ কি.মি. এলাকায় ১০৩টি বাতি, নন-সোলারের আওতায় ৫৬ কি.মি. এলাকাজুড়ে ৩০১৭টি বাতি স্থাপন করা হবে।

মেয়র বলেন, পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যকর ও বিশ্বমানের বাসোপযোগী নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় গৃহীত কর্মসূচির অধীনে প্রায় ১৭শ নতুন সেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণ কার্যক্রম শতভাগ সফল করার জন্য কাউন্সিলরদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান মেয়র। তিনি বলেন, এ বছরের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শতভাগ সফলতা অর্জন করতে হবে। তিনি ২০১৮ সালের মধ্যে নগরীকে শতভাগ আলোকিত করার লক্ষ্যে প্রণীত কর্মসূচিগুলো তুলে ধরেন। এছাড়া জাইকার আওতায় পোর্ট কানেকটিং রোড, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, ফ্লাইওভার, শিক্ষা ভবন নির্মাণ, ওভারপাস নির্মাণ ইত্যাদি প্রকল্পগুলো সভায় উপস্থাপন করা হয়।

মেয়র বলেন, নতুন অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট চালু হলে সিডিএ, ওয়াসা, পিডিবি, টিঅ্যান্ডটি, রোডস্ অ্যান্ড হাইওয়েসহ বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়নকাজের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো গুণগতমানসম্পন্নভাবে দ্রুত মেরামত করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন,  যেখানে গর্ত সেখানেই মেরামত সে নির্দেশনা শতভাগ কার্যকর আছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ড্রেনেজ ও স্যুয়ারেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণীত হচ্ছে, এ মাস্টারপ্ল্যানের অধীনে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামবাসী সুফল ভোগ করবে। এছাড়া পাওয়ার চায়নার মাধ্যমে ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণীত হবে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে পাওয়ার চায়না তাদের প্রকল্প প্রস্তাবনা সিটি করপোরেশনকে অবহিত করবে। সরকার টু সরকার পদ্ধতিতে এ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়িত হবে। সভায় নিজস্ব আয় বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ, হাটবাজার ইজারা পর্যালোচনা, চিহ্নিত অবৈধ হাটবাজার ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে উচ্ছেদ, আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, খেলাধুলার মানোন্নয়ন, শ্রমিকদের জন্য বর্ষাকালীন রেইনকোট ক্রয়, রেডিয়ামযুক্ত হলুদ ইউনিফরম ক্রয়, দুর্যোগ-পূর্ব প্রস্তুতি ও সচেতনতা কার্যক্রম জোরদারকরণ, ওয়ার্ডভিত্তিক জঙ্গি প্রতিরোধ কমিটিকে সক্রিয়করণ, শিশুবান্ধব নগরী গড়ার লক্ষ্যে চাইল্ড রিসার্চ সেন্টার গড়ে তোলাসহ পথশিশু ও এতিমদের  জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, কাট্টলী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে প্রাতঃশাখা চালুকরণ, স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে ‘মডার্ন ফুড ল্যাবরেটরি’ বিষয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে পরিচালনায় সুপারিশ গ্রহণ, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পরিত্যক্ত জায়গায় উদ্যান স্থাপন, বে-আইনিভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দেয়াল লিখন, ডিজিটাল ব্যানার ইত্যাদি উচ্ছেদকরণ, যানজট নিরসনসহ নানাবিধ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।