শেয়ার বিজ ডেস্ক: জাতিসংঘে বঙ্গোপসাগরের মহীসোপান সীমা-সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্যাদি পেশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সূত্র: বাসস।
গতকাল জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২১ সদস্যের ‘কমিশন অন দ্য লিমিটস অব দ্য কন্টিনেন্টাল শেল্ফ (সিএলসিএস)’-এর ৫৪তম অধিবেশনে বিস্তারিত এই হালনাগাদ তথ্যাদি উপস্থাপন করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব ও প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলমসহ কমিটির অন্য কারিগরি বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর সিএলসিএসে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের মহীসোপানের সংশোধিত তথ্য দাখিলের পর এ-সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্যাদি উপস্থাপন করা হলো।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথমবারের মতো সিএলসিএসে বাংলাদেশের মহীসোপান সীমা-সংক্রান্ত দলিলাদি জমা দেয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত সমুদ্রসীমাজনিত বিরোধের কারণে কমিশন বাংলাদেশের দাখিলকৃত দলিলাদি সে সময় পরীক্ষা করতে পারেনি।
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালের দাখিল আবার পর্যালোচনা করে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর সিএলসিএসের কাছে বাংলাদেশের মহীসোপান সীমা-সংক্রান্ত দলিলাদির নতুন সংস্করণ পেশ করে। এই সংশোধিত দাখিলে ট্রাইব্যুনাল-নির্ধারিত বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানের নতুন সীমারেখা অনুসরণ করা হয়।
এই উপস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানে তার অধিকার রক্ষা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত তথ্য সরবরাহ করেছে। এরপর সিএলসিএসের নিয়ম অনুযায়ী এ উদ্দেশ্যে গঠিত একটি সাব-কমিশন বাংলাদেশের উপস্থাপিত দলিলাদি পরীক্ষা করে বাংলাদেশের মালিকানার বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করবে। এর ফলে বাংলাদেশ ওই এলাকায় প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, যেখানে সম্পদের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশের মহীসোপান সীমার বিষয়ে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ বিশাল সমুদ্র এলাকার সব প্রাণযুক্ত ও প্রাণহীন প্রাকৃতিক সম্পদের অন্বেষণ, সংরক্ষণ ও উন্নয়নে একটি ভিত্তি প্রদান করবে, যা দেশের টেকসই উন্নয়ন, শক্তির চাহিদা ও জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।’
বাংলাদেশ সরকার এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই দলিলাদির উপস্থাপন নিয়ে কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পেট্রোবাংলা, বাপেক্স, জিওলজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশ, স্পারসো ও বিআইডব্লিউটিএ’র একটি বিশেষজ্ঞ দল এই দাখিল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।
এ ছাড়া কমনওয়েলথ সচিবালয় এবং জাতিসংঘের ট্রাস্ট ফান্ড থেকে বাংলাদেশ এ বিষয়ে আইনি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছে।