Print Date & Time : 25 June 2025 Wednesday 4:52 pm

জাতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে সুলতানা কামাল

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ‘সমস্যা সমাধানে সরকারের মনে হয় এ একটিই উপায় আছে। তা হচ্ছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। যখন দেশে সুশাসন ও জবাবদিহির চরম অভাব হয়, তখনই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ জাতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে’ বলে মনে করেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।
রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উত্তম হত্যার বিচার, সড়কপথে পরিবহন নৈরাজ্য ও মানুষ হত্যা বন্ধের দাবিতে’ গতকাল এক প্রতিবাদ সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। গত ২১ মে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে বাসের ধাক্কার পর ট্রাকচাপায় নিহত হন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উত্তম কুমার দেবনাথ। প্রাণ হারানোর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনসহ (বাপা) ২৪টি সংগঠন এ সমাবেশ করে।
সমাবেশে বাপার সহসভাপতি সুলতানা কামাল বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। এ দেশের মানুষ যেখানেই যাচ্ছে, মরিয়া হয়ে ছুটে যাচ্ছে। অন্যকে মাড়িয়ে কেন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা? এর কারণ পুরো সমাজে অনাচার ঢুকে পড়েছে, যার খেসারত দিচ্ছি আমরা সবাই মিলে। আমাদের দেশের মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই, সংবেদনশীলতা ভোঁতা হয়ে গেছে। যারা দেশ পরিচালনা করছেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে তাদের ভাবতে হবে। আমরা সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দাঁড়িয়েছি।’
বাপার আরেক সহসভাপতি রাশেদাকে চৌধুরী বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগীদের কান্না নীতিনির্ধারকদের কানে পৌঁছায় না। আমরা তাদের দেশ পরিচালনার অর্থ জোগান দিচ্ছি। তারা আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ দেশের মানুষকে সোচ্চার হতে হবে।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা, বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবিব, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে অভিমত দেন বক্তারা। সমাবেশে উত্তমের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়াসহ ১৬টি দাবি জানানো হয়েছে।
সমাবেশে উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে উত্তম দেবনাথ হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার ও উত্তমের পরিবারের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩-এর যুগোপযোগী সংশোধনী আনা ও তা বাস্তবায়ন, পথচারী ও অযান্ত্রিক যানে নিরাপদে চলাচলের উপযোগী পরিবেশ তৈরি, উল্টোপথে গাড়ি চালানো বন্ধ করা, যথাযথভাবে বিদ্যমান সড়কপথ পরিচালনা ও মেরামত করা, ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকদের নিষিদ্ধ ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা, পরিবহন মালিকদের জবাবদিহির আওতায় আনা এবং অপরাধের ভিত্তিতে শাস্তির বিধান চালু করা, ত্রæটিযুক্ত গাড়ি বাতিল করা, ট্রিপের পরিবর্তে চালকদের মাসিক বেতনে নিয়োগের ব্যবস্থা এবং সড়ক ব্যবহারকারী সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে।