নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা এবং রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফার প্রতি পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন রেখে আত্মপ্রকাশ করেছে ১১টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন এ জোটের নাম ঘোষণা করা হয়। জোটে থাকা রাজনৈতিক দলগুলো হলোÑন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), জাগপা, ডেমোক্রেটিক লীগ, পিপলস লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ন্যাপ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, সাম্যবাদী দল, গণদল, ন্যাপ ভাসানী ও বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি।
অনুষ্ঠানে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। তিনি বলেন, ভোটারবিহীন একদলীয় আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী শাসন, দুর্নীতিতে আকুণ্ঠ নিমজ্জিত মহাসংকটের এক যুগ সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ আজ নিপতিত। আজ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ভয়াবহ বেকারত্ব, কর্মশূন্যতায় দেশের মানুষ দিশেহারা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পটভূমিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় পরায়নতাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন, দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫১ বছর পরও স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার, ভাতের অধিকার, কর্মের অধিকার, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আজ প্রশাসনিক দুর্বৃত্তের কবলে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের সব সেবা খাত, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ, ব্যবসা বাণিজ্য, হাটবাজার আজ সরকারদলীয় লুটেরাদের হাতে জিম্মি। সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের সম্ভাবনাময় যুব সমাজকে ধ্বংস করতে তৃণমূল পর্যায় থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ইয়াবা, হেরোইন, মদ, গাজাসহ নানা প্রকার ধ্বংসাত্মক মাদকদ্রব্যে আসক্ত করে রাষ্ট্রের মূলশক্তি যুব সমাজকে পরিবার ও সমাজের সামনে এক অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। দেশের সর্বস্তরে লুণ্ঠনের ধারাবাহিকতায় সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে দলীয় নেতাদের তত্ত্বাবধানে জুয়া, ক্যাসিনো, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে পুষ্ঠিত অর্থ পাচার করে প্রবাসে বেগম পাড়া তৈরি করে আমাদের প্রিয় এই মাতৃভূমিকে এক অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ আরও বলেন, স্বাধীনতাকে বুকে ধারণ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার মাধ্যমে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি বর্তমান দুর্নীতিবাজ, সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার লুণ্ঠনকারী ও মানুষের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার হরণকারী শেখ হাসিনার আওয়ামী লুটেরা সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’-এর দীপ্ত শপথ নিয়ে সর্বস্তরের জনতাকে নিয়ে দেশ গড়ার লক্ষ্যে আজ রাজপথে বলিয়ান। আজ দেশব্যাপী জাগরণ উঠেছে ‘হঠাও হাসিনা বাঁচাও দেশ, ভুক্তভোগী মানুষের বাংলাদেশ’।
এ সময় তিনি বিএনপিসহ সব জোট ও দল সংগঠনের সঙ্গে রাজ পথে যুগপৎ কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের বহুল আকাক্সিক্ষত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষকে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, জাগপা’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুতফর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গরীবে নেওয়াজ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান শাওন সাদেক, বিকল্পধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড নুরুল ইসলাম, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ন্যাপ ভাসানীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আকন্দ, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন।