জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগ নীতিমালা জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সচিবের বেতনের সমপরিমাণ (৭৮ হাজার টাকা) সম্মানি নির্ধারণ করে বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগের নীতিমালা করেছে সরকার। তবে জাতীয় অধ্যাপক সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন না। একই সময়ে অনধিক চারজনকে জাতীয় অধ্যাপক পদে নিয়োগ করা যাবে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে চার সদস্যের মনোনয়ন কমিটি জাতীয় অধ্যাপক মনোনয়ন করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে গত ১৮ ডিসেম্বর সই করা ‘বাংলাদেশ জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগ নীতিমালা-২০২৩’ প্রকাশ করে।

নীতিমালা অনুযায়ী চার সদসস্যের মনোনয়ন কমিটিতে চেয়ারম্যান থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী। মনোনয়ন কমিটিতে অন্য দুইজন সদস্য থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত দুইজন মন্ত্রী। এছাড়া সদস্য হিসেবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্য থাকবেন চার সদস্যের এই কমিটিতে।

নিয়োগ

জাতীয় অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ মনোনয়ন কমিটির কাছে প্রতিটি পদের বিপরীতে তিনজন করে যোগ্য ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করবে। মনোনয়ন কমিটি প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে জাতীয় অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য মনোনয়ন দেবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য এই মনোনয়ন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ পেশ করা হবে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ নিয়োগপত্র জারি করবে।

নিয়োগের শর্ত

উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রথিতযশা অধ্যাপক যিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার গবেষণা ও ব্যুৎপত্তির জন্য স্বীকৃতি লাভ করেছেন এবং জাতীয় ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন। এছাড়া যিনি নিজেকে সক্রিয়ভাবে গবেষণায় রত রাখতে সক্ষম, সেই ধরনের অধ্যাপক এই পদের জন্য নির্বাচিত হবেন। একই সময়ে অনধিক চারজনকে জাতীয় অধ্যাপক পদে নিয়োগ করা যাবে।

অনধিক ৭৫ বছর বয়স্কযোগ্য অধ্যাপক জাতীয় অধ্যাপক পদের জন্য মনোনীত হবেন। তবে মনোনয়ন কমিটি বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন অধ্যাপকের ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা শিথিল করতে পারবে।

জাতীয় অধ্যাপক পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন। তবে মনোনয়ন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ করা যাবে। রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে পারবেন।

দায়িত্ব ও সুবিধাদি

জাতীয় অধ্যাপক সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন না। তিনি কোনো গবেষণা সংস্থা বা শিক্ষায়তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে নিজের পছন্দমতো ক্ষেত্রে গবেষণামূলক কাজ করবেন। তিনি তার গবেষণা কাজের ক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে অবহিত করবেন।

জাতীয় অধ্যাপক যে গবেষণা সংস্থা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবেন সেই সংস্থা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে তার শিক্ষা/গবেষণামূলক কাজের অগ্রগতির বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করবেন। সংশ্লিষ্ট সংস্থা/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ ইউজিসি কমিশনের চেয়ারম্যানকে তার কাজের অগ্রগতি সম্বন্ধে অবহিত রাখবেন এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল ইউজিসি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে পাঠাবেন। গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রয়োগের উদ্যোগ নেবে।

জাতীয় অধ্যাপক ইউজিসির মাধ্যমে সম্মানি গ্রহণ করবেন। তিনি যে গবেষণা সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবেন সেই সংস্থা/প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা/গবেষণামূলক কাজ কবার প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জাতীয় অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তার যে সমস্ত বই পুস্তক ছাপানো হবে তা থেকে প্রাপ্ত সব সুবিধাদি তিনি প্রাপ্য হবেন।

জাতীয় অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তিনি সরকারের পূর্বানুমতি নিয়ে বিদেশে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ অধ্যাপক (ঠরংরঃরহম ঢ়ৎড়ভবংংড়ৎ) হিসেবে অধ্যাপনা করতে পারবেন।

সম্মানি

জাতীয় অধ্যাপকরা জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী সরকারের সচিবের বেতনের সমপরিমাণ ৭৮ হাজার টাকা (নির্ধারিত) মাসিক ভিত্তিতে সম্মানি হিসেবে গ্রহণ করবেন। যদি এমন কোনো অধ্যাপককে জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগ করা হয় যিনি কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে কর্মরত আছেন তবে তিনি তার ইচ্ছানুযায়ী চাকরিতে থাকাকালীন তার উল্লিখিত পদের বেতন-ভাতা অথবা জাতীয় অধ্যাপক পদের সম্মানির যেকোনো একটি গ্রহণ করতে পারবেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০