নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড জটিলতায় মারা গেলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। ঢাকার শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয় বলে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব খন্দকার দেলোয়ার জালালী জানিয়েছেন। জিয়াউদ্দিন বাবলুর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। গত মাসে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন জিয়াউদ্দিন বাবলু। অবস্থার অবনতি ঘটার পর তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল।
আজ শনিবার রাতে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। এর আগে এশার নামাজের পর রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে জাতীয় পার্টির সূত্রে জানা গেছে দলের মহাসচিবের মরদেহ আজ দুপুর থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাখা হবে।
দেলোয়ার জালালী জানিয়েছেন, শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে জাপা মহাসচিবের মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান জিয়াউদ্দিন গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে করোনায় আক্রান্ত হন। গত ৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল। আজ সকালে মৃত্যুর আগে তিনি সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বাবলুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ শোক প্রকাশ করেছেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনি ছাত্রজীবন থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গণমানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন ডাকসুর জিএস পদে। মানুষের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে জিয়াউদ্দিন সব সময় ছিলেন আপসহীন।
জিয়াউদ্দিন আহমেদ ১৯৫৪ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ছাত্রজীবনে বাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ’৮০-এর দশকে সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের দলে যোগ দেন তিনি। তিনি এরশাদ সরকারের উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জিয়াউদ্দিন কয়েক বছর আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের ভাগনি মেহেজাবুন্নেসা রহমানকে বিয়ে করেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী অধ্যাপিকা ফরিদা আক্তার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। প্রথম স্ত্রীর সংসারে জিয়াউদ্দিনের এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। এদিকে দলের মহাসচিবের মৃত্যুতে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি। শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত জাতীয় পার্টির প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে, কালো পতাকা ওড়ানো হবে। রোববার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হবে শোক সভা অনুষ্ঠিত হবে।