জানুন সংক্রামক ব্যাধি ফাইলেরিয়াসিস সম্পর্কে…

ফাইলেরিয়াসিস এক ধরনের সংক্রামক ব্যাধি। এটি ‘গোদ’ নামেও পরিচিত। রোগটি মূলত মানুষের শারীরিক সমস্যাজনিত। কয়েক প্রজাতির স্ত্রী-জাতীয় মশা এ রোগের জন্য দায়ী। বিশেষ করে কিউলেক্স স্ত্রী মশা ফাইলেনিয়াসিস রোগীকে কামড় দিয়ে পরজীবী বহন করে সুস্থ মানুষকে সংক্রমিত করে। মশার মাধ্যমে এসব পরজীবী মানুষের রক্তে প্রবেশ করে লসিকা নালিতে পূর্ণতা লাভ করে। পরে লাখ লাখ অণুজীবের জš§ দেয়। এরা মানুষের শরীরে আট থেকে ১০ বছর বেঁচে থাকতে পারে। শরীরের শিরায় উপস্থিত হয়। রক্তের ক্ষতি করে।

অপুষ্টি, দারিদ্র্য, সামাজিক কুসংস্কার, নোংরা পরিবেশ, স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব প্রভৃতি এ রোগ সংক্রমণের জন্য দায়ী। প্রাপ্তবয়স্ক

পুরুষ-নারী কিংবা যে কোনো বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁটুর নিচের অংশ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত, হাত, স্তন বা যৌনাঙ্গে ব্যথা অনুভব হয়ে এক সময় অঙ্গগুলো ফুলে যায়। এ পর্যায়কে ‘ফাইলেরিয়াসিস’ বা গোদ বলে। তবে অনেকের উপসর্গ ছাড়াই গোদ হতে পারে। আর উপসর্গ দেখা না দিলে এ রোগের চিকিৎসা সহজ নয়। প্রাথমিক কিছু লক্ষণ আগে থেকে বুঝতে পারলে চিকিৎসা করে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

লক্ষণ

#            দেহের যে অংশে রোগটি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সে স্থানের চামড়া মোটা ও শুষ্ক হতে থাকে। মাঝেমধ্যে ক্ষত বা গর্ত হতেও দেখা যায়। পাশাপাশি ত্বকের বর্ণ গাঢ় হতে থাকে। এ সময় আক্রান্ত স্থানে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হয় না

#            এ রোগের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে, হাত বা পা ধীরে ধীরে ফুলতে থাকে। এরপর স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ফুলে যায়। তখন দেখতে হাতির পায়ের মতো লাগে। এ সময় আক্রান্ত স্থানে পানি জমে ভারী হয়ে যায়

#            আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে, অসুস্থতা বোধ করা। শরীরে জ্বর ও ঠাণ্ডা অনুভব করা, মাঝেমধ্যে ব্যথা অনুভব করা, মনে অস্থিরতা প্রভৃতি

#            শরীর দুর্বল হয়ে যায়, ওজন কমতে থাকে। আক্রান্ত স্থানটি ভারী হতে থাকে।

চিকিৎসা

যথাযথ চিকিৎসা না করালে আক্রান্ত ব্যক্তি বিকলাঙ্গও হয়ে যেতে পারে। তাই উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সরাসরি ফাইলেরিয়াসিসের জীবাণু নিশ্চিত করতে হবে। এরপর আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে মিশে থাকা পরজীবী ধ্বংস করতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। তবে পরজীবী ধ্বংস করতে যেসব ওষুধ খাওয়ানো হয়, সেগুলো পূর্ণবয়স্ক জীবাণুকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে না। অনেকেই তাই গোদ বা পা ফোলা নিয়েই বেঁচে থাকেন। কিন্তু এতে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে সুস্থ ব্যক্তিতে সংক্রমিত হয়। তাই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফুলে যাওয়া অংশটি ঠিক করে নেওয়াই উত্তম।

প্রতিরোধ

#            মশা থেকে রেহাই পেতে বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে

#            ঝোপ-ঝাড় থাকলে কেটে ফেলতে হবে

#            কোনো ফেলে দেওয়া পাত্র বা টবে যাতে পানি না জমে

#            মশা মারার ওষুধ স্প্রে করতে হবে। ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে

#            বেশি করে পুষ্টিজাতীয় খাবার খেতে হবে। স্বাস্থ্যসচেতন হতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০