শেয়ার বিজ ডেস্ক : চলতি বছরের ১১ মাসে ভিয়েতনামে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) হয়েছে ৩৩ দশমিক শূন্য আট বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ৮২ দশমিক আট শতাংশ বেশি। খবর ভিয়েতনাম নিউজ।
ভিয়েতনামের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব বিনিয়োগের বেশিরভাগই নতুন প্রকল্পের। ১১ মাসে মন্ত্রণালয় ১৯ দশমিক আট বিলিয়ন ডলারের দুই হাজার ২৯৩ নতুন প্রকল্পের নিবন্ধন দিয়েছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ৫২ শতাংশ বেশি।
নতুন প্রকল্পের মধ্যে এক হাজার ১০০ প্রকল্পেই আছে আট বিলিয়ন ডলার, গত বছরের তুলনায় যা ৫৭ দশমিক ছয় শতাংশ বেশি। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন পাঁচ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৫৭ দশমিক ছয় শতাংশ বেশি।
নভেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে। ওই সময়ে এ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে ১৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ৪৫ দশমিক দুই শতাংশ বেশি। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে আট দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার এবং আবাসন খাতে বিনিয়োগ হয়েছে দুই দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার।
গত ১১ মাসে ভিয়েতনামে বিনিয়োগ করেছে ১১২ দেশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে জাপান। দেশটি মোট আট দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা মোট বিনিয়োগের ২৭ শতাংশ। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর বিনিয়োগ করেছে যথাক্রমে আট দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার ও চার দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার। মোট বিনিয়োগের যা ২৪ দশমিক সাত ও ১৪ দশমিক দুই শতাংশ।
শুধু এফডিআই নয়, রফতানিও বেড়েছি দেশটির। পৃথক প্রতিবেদনমতে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভিয়েতনাম থেকে গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১১ দশমিক তিন শতাংশ। ওই সময়ে দেশটি মোট ১৪ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলারের এসব পণ্য রফতানি করেছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও জাপানে।
ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রেই গার্মেন্ট রফতানি হয়েছে ১১ দশমিক আট বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি নয় দশমিক এক শতাংশ বেশি। এছাড়া ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফাইবার ও সুতা বিক্রিও ২৭ দশমিক চার শতাংশ বেড়ে এক দশমিক সাত বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
চলতি বছর ভিয়েতনামের গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল রফতানি আয় ৩১ দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন স্থানীয় রফতানিকারকরা।
চলতি ২০১৭ সালে ১৮৮ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ভিয়েতনাম। আগের বছরের তুলনায় এটি ছয় দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।
বছরের শুরুতে দেশটির শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বেশকিছু মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে সই এবং বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ায় চলতি বছরে ভিয়েতনামের আমদানি ও রফতানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় বলছে, অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ এশিয়ান ন্যাশনভুক্ত (আশিয়ান) দেশগুলো ভিয়েতনামের রফতানি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
তথ্যমতে, ‘জাতীয় বাণিজ্য উন্নয়ন কর্মসূচি ২০১৭’-এর আওতায় ১৯৯টি বাণিজ্য উন্নয়ন প্রকল্পে ভিয়েতনাম চার দশমিক এক মিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতাভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে রফতানি বাড়ানোর লক্ষ্যেই এ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে নতুন করে এক দশমিক ছয় মিলিয়ন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়েছে ভিয়েতনাম। এর মধ্যে এক লাখ পাঁচ হাজার কর্মী বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটি।
