জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর: চীনের শিল্প মুনাফা বেড়েছে ২৩ শতাংশ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে চীনের প্রধান শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফায় ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের (এনবিএস) সাম্প্রতিক প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনের শিল্প মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২২ দশমিক আট শতাংশ। খবর সিনহুয়া।

এনবিএসের তথ্যমতে, ২০ মিলিয়ন ইউয়ান বা তিন মিলিয়ন ডলারের বেশি আয়ের কোম্পানিগুলোর প্রথম ৯ মাসে মুনাফা হয়েছে পাঁচ দশমিক ৫৮ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ২২ দশমিক আট শতাংশ বেশি।

জানুয়ারি থেকে আগস্টে চীনের শিল্প আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ২১ দশমিক ছয় শতাংশ এবং জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ে ছিল ২১ দশমিক দুই। অর্থাৎ জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে প্রবৃদ্ধি আরও বাড়ল।

শুধু সেপ্টেম্বরেই দেশটির শিল্প আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২৭ দশমিক সাত শতাংশ। আগস্টে প্রবৃদ্ধি ছিল ২৪ শতাংশ এবং জুলাইয়ে ছিল ১৬ দশমিক পাঁচ শতাংশ।

৪১টি শিল্প জরিপের মধ্যে ৩৯টিতেই প্রথম ৯ মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেশি ছিল।

তথ্যমতে, প্রথম সাত মাসে চীনের সরঞ্জাম ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক এক শতাংশ বেড়ে তিন দশমিক সাত ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে। আর খনিশিল্পের মুনাফা ৭৯০ শতাংশ বেড়ে ২৭৯ দশমিক ছয় বিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছায়।

২০১৫ সালে খারাপ করার পর গত বছর থেকে চীনের শিল্প খাত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। এ খাত দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনে এক-তৃতীয়াংশ অবদান রাখে।

এনবিএসের তথ্যমতে, জুলাইয়ে প্রধান শিল্পপ্রতিষ্ঠানের খরচ কমেছে। প্রত্যেক ১০০ ইউয়ান আয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর খরচ হয়েছে ৯৩ দশমিক ১২ ইউয়ান। আগের বছরের একই সময় খরচ হয়েছিল ৯৩ দশমিক ৪১ ইউয়ান।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও ভালো মুনাফা করেছে। জুলাইয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের মুনাফা বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ দশমিক দুই শতাংশ।

নতুন এ উপাত্ত বলে দিচ্ছে, চীনের অর্থনীতি ক্রমাগত উন্নতি করছে। আর্থিক ঝুঁকির মোকাবিলায় সস্তা ঋণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় চলতি অর্থবছরের বাকি মাসগুলোয় প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। তবে শিল্পোৎপাদন, ভোক্তা খরচ বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ শক্ত অবস্থানে থাকায় প্রবৃদ্ধি ভালো হয়েছে।

বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বছরের বাকি সময়টাতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছর ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের চেয়েও বেশি হয়েছে শেষ প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধি। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়নার গভর্নর ঝোও শাওচুয়ান সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, অর্থনৈতিক রূপান্তরের মাধ্যমে ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। দেশের রফতানি ও আমদানি দ্রæত হারে বাড়ছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমছে ও আর্থিক আয় বাড়ছে।

চীনের অর্থনীতি সারা বিশ্বের আমদানি পরিস্থিতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পণ্য ও বাণিজ্যিক সেবার দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক চীন। দেশটির অর্থনীতি মন্থর হলে এসব পণ্যের দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

২৬ বছরের মধ্যে ২০১৬ সালে সর্বনি¤œ অবস্থানে নেমে এসেছিল চীনের প্রবৃদ্ধি। এ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় সারা বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ওই বছর দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ছয় দশমিক সাত শতাংশ। এর আগের বছর ছিল ছয় দশমিক ৯ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০