জাপান থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি বিশেষ বিধানের আওতায় জাপান থেকে আরও এক কার্গো (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

প্রতি এমএমবিটিইউর জন্য ১৬ ডলার ৫০ সেন্ট খরচ ধরে এক কার্গো এলএনজির জন্য খরচ হবে মোট ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা।

গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এই ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন পায়। পরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

তিনি বলেন, মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় এ এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানি করা হবে জাপানের এমএম জেরা করপোরেশন কাছ থেকে।

আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে প্রায় আট মাস খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ রেখেছিল সরকার। দাম কিছুটা কমে আসায় দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে গত ১ ফেব্রুয়ারি এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।

পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা তখন জানিয়েছিলেন, ফরাসি কোম্পানি টোটাল এনার্জিস থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনা হচ্ছে, যা ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ দেশে পৌঁছাবে। প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম পড়বে ২০ ডলারের কাছাকাছি।

এর আগে সিঙ্গাপুরের ভিটল এনার্জির কাছ থেকে গত বছরের মে মাসের শেষ দিকে সবশেষ এক কার্গো এলএনজি কিনেছিল সরকার, যেখানে প্রতি ইউনিটের দাম পড়েছিল ২৫ ডলার ৭৫ সেন্ট।

দেশে নতুন শিল্পকারখানা বাড়তে থাকায় গ্যাসের চাহিদা মেটাতে গত বছরের প্রথম ছয় মাসে আন্তর্জাতিক খোলা বাজার থেকে নয় কার্গো এলএনজি আমদানি করেছিল সরকার।

পরে একদিকে ডলার সংকট, অন্যদিকে এলএনজির মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ করে দেয়া হয়।

ফলে দেশে একই সঙ্গে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট দেখা দেয়। জুলাই থেকে ফিরে আসে লোডশেডিং, গ্যাসের অভাবে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ রাখতে হয়। তবে ডিসেম্বরে শীত শুরু হওয়ায় গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসে; পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।

গত জানুয়ারিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য গ্যাসের দাম এক লাফে ১৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়; যা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

তবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেব্রুয়ারিতে নতুন দাম কার্যকর না করে খোলা বাজার থেকে আমদানি করা এলএনজি সঞ্চালন লাইনে মিশ্রণ করার পর দাম বাড়ানোর কথা বলেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ডিএপি ফার্টিলাইজাইর কোম্পানির জন্য আন্তর্জাতিক উš§ুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২০ হাজার টন ফসফরিক এসিড আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যার প্রতি টনের দাম ৫৫৯ ডলার ৫০ সেন্ট, গতবার যা কেনা হয়েছিল ৬৮৮ ডলার ৫০ সেন্ট। এবার মোট ব্যয় হবে ১১৯ কোটি ৪৯ লাখ ৮০ হাজার ১০০ টাকা। মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এই রাসায়নিক সরবরাহ করবে।

বিসিআইসির আরেক কোম্পানি টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের জন্য আন্তর্জাতিক উš§ুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২৫ হাজার টন রক ফসফেট আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এবার প্রতি টনের দাম পড়ছে ৩২৯ ডলার ৮৫ সেন্ট, যা আগে ছিল ৩৩৪ ডলার। এবার মোট ব্যয় হবে ৮৮ কোটি ৬ লাখ ১৭ হাজার ৩৮ টাকা। রাজধানীর এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল এই রাসায়নিক সরবরাহ করবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে এদিন। প্রতি লিটার তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৭৪ টাকা ৫০ পয়সা; আগের কেনাকাটায় খরচ হয়েছিল ১৭৬ টাকা ৮৮ পয়সা। এবার ব্যয় হবে মোট ১৯১ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। দেশীয় কোম্পানি সিটি এডিবল অয়েল ওই তেল সরবরাহ করবে।

আন্তর্জাতিক উš§ুক্ত দরপত্রর মাধ্যমে তুরস্ক থেকে ৮ হাজার টন মসুর ডাল কিনবে টিসিবি। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৮৫৮ ডলার, মোট ক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।

‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক স্থানীয় সরকারের প্রকল্পের আওতায় ঝলাকাঠির নলছিটিতে ৭৩০ মিটার সেতু নির্মাণের কাজ যৌথভাবে এম এম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এমএস পোদ্দার এন্টারপ্রাইজকে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ সেতুর জন্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০