জাপান প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পণ্য আমদানি-রপ্তানি করেছে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: গত বছর ডিসেম্বরে জাপানের আমদানি ও রপ্তানি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে। শুধু ডিসেম্বরই নয়, ১০ মাস ধরে দেশটির রপ্তানি ক্রমে বাড়ছে। এ সময় দেশটি প্রায় ছয় হাজার ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি ও রপ্তানির রেকর্ড করে, যা ১৯৭৯ সালের পর সর্বোচ্চ। খবর: নিক্কেই এশিয়া।

২০২১ সালের শেষের দিকে এসে সরবরাহ ব্যবস্থার সব ধরনের বাধা দূর হতে থাকে। এ কারণে আমদানি-রপ্তানি বাড়ে জাপানে। এ কারণে দেশটির অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এর আগে কভিড-১৯ মহামারিতে দেশটির বাণিজ্যের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে ২০২০ সালে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশ স্থবির হয়ে পড়ে।

গতকাল নিক্কেই এশিয়া এক প্রতিবেদনে জানায়, অর্থনীতিতে সুবাতাস বইলেও ক্রমাগতভাবে কাঁচামালের ঘাটতি জাপানের কোম্পানিগুলোর জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। টয়োটার মতো গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সেমিকন্ডাক্টর ঘাটতির কারণে বেকায়দায় পড়েছে। তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমে গেছে। উপরন্তু কভিড-১৯-এর নতুন ধরন ওমিক্রনের অনিশ্চয়তা এখনও রয়ে গেছে।

নোরিনচুকিন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান অর্থনীতিবিদ তাকেশি মিনামি বলেন, ওমিক্রনের অনিশ্চয়তা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। এর প্রভাবে সরবরাহ ব্যবস্থায় নানা ধরনের সমস্যার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ভোক্তাব্যয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে জানান তিনি।

জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে নিক্কেই এশিয়া জানায়, ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় গত বছর ডিসেম্বরে দেশটির রপ্তানি বেড়েছে ১৭ দশমিক পাঁচ শতাংশ। এর আগে খ্যাতনামা ম্যাগাজিন ইকোনমিস্ট ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের জরিপে বলা হয়েছিল, জাপানের রপ্তানি বাড়তে পারে ১৬ শতাংশ। এর আগের

মাসেও প্রত্যাশার বেশি রপ্তানি হয়Ñ২০ দশমিক পাঁচ শতাংশ।

জাপানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার চীন। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চীনে জাপানের রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক আট শতাংশ। গত বছর জাপানে ইস্পাত রপ্তানি বেড়েছে ৭৫ দশমিক এক শতাংশ। তবে রপ্তানির বিপরীতে লাভ হয় ১০ দশমিক দুই শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ২২ দশমিক এক শতাংশ। পাঁচ মাসে গাড়ি রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ।

কাঁচামালের দাম বাড়লেও ডিসেম্বরে আমদানি ব্যয় বাড়ে ৪১ দশমিক চার শতাংশ। অবশ্য এ সময় ৪২ দশমিক আট শতাংশ আমদানি ব্যয় বাড়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে নভেম্বরে এ হার ছিল ৪৩ দশমিক আট শতাংশ। এ কারণে বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপান। এ সময় জ্বালানির দাম বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে বাণিজ্যে।

‘অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলোর অন্যতম সমস্যা আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি। এ সমস্যায় ভুগছে বিশ্বের সব উন্নত দেশ। জাপানও এর ব্যতিক্রম নয়,’ বলেন তাকেশি মিনামি। তিনি আরও বলেন, দুর্বল ইয়েন ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি জাপানের অর্থনীতির বেশ ক্ষতি করেছে।

দ্য ব্যাংক অব জাপান জানায়, দুর্বল হলেও জাপানের অর্থনীতি ইয়েনের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। এমনকি পণ্য আমদানি খরচ বৃদ্ধির কারণে গৃহস্থালি পণ্যের দাম বেড়ে গেলেও ইয়েন ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

গত বছর শেষ প্রান্তিকে জাপানের অর্থনীতিতে ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করা হয়েছিল। অভ্যন্তরীণ ভোক্তাব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হয় দেশটি।

তবে নীতিনির্ধারকরা ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ে চিন্তিত। কেননা মহামারি শুরুর পর গত সপ্তাহে এ ধরনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি ছিল। জাপানে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৭২ হাজার ৮৯৩ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ১৮ হাজার ৪৫৭ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৪১ জন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০