প্রতিনিধি, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অন্তঃবিভাগ মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ল’ সোসাইটি মুটিং এন্ড ডিবেটিং ক্লাবের আয়োজনে এ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ ব্যাচ শিক্ষার্থীদের দল টিম-০৪ এবং রানারআপ হয়েছেন ৪৯ ব্যাচ শিক্ষার্থীদের দল টিম-১০।
আজ শনিবার (৯ মার্চ) সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কালাম।
প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে টিম-০৪ ও টিম-১০ এর যুক্তিতর্কের বিষয় ছিল তুরাগ নদী নিয়ে করা রিট পিটিশন মানবাধিকার ও শান্তির জন্য বাংলাদেশ এবং অন্যান্য বনাম নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং অন্যান্য। মামলাটির বিচারক ছিলেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কালাম। শুরুতেই মামলাটির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন টিম-১০ এবং বিপক্ষে টিম-০৪। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডে টিম-০৪ পক্ষে এবং টিম-১০ বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এছাড়াও প্রতিযোগিতায় সেরা মুটার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবা খাতুন রিতু এবং সেরা রিসার্চার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন একই বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত তাবাসসুম। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দল ও রানারআপ দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিচারপতি আশরাফুল কালাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল বলেন, যারা লেখা পড়া জানে না, তাদের কথা বলার জন্য যেকোনো লোকই আসতে পারে তারা হলো আইনজীবী। এটাই লোকাস স্টান্ডি। তাই জনগণের অধিকার ও সম্পদ রক্ষার জন্য যেন সবাই আসতে পারি। আইনে আমরা কোনো জায়গায় ফিক্সড থাকবো না। আইনের শিক্ষার্থীদের বলবো, আমাদের সর্বোচ্চ আইন সংবিধান। এটা হলো শাসন তন্ত্র। ১৬ তম সংশোধনে আমি অনেক কিছু লিখেছি, যা জনগণের জন্য লেখা। দেশের ১৮ কোটি মানুষ সমান অধিকার রাখে। এদেরকে প্রতিনিধিত্ব করে ৩০০ জন সংসদ সদস্য। তাদেরকেও আইন জানতে হবে। যারা আইনের প্রণয়নকারী তাদেরকে আইন জানতে হবে। এই দেশে আইনের শাসন, রুল অব ল তে আনতে হলে আইনের ছাত্র হিসেবে আমাদের পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে আইন আয়ত্বে আনতে হবে। আনরুলি লোকদেরকে রুলে আনতে হবে। আইনের ছাত্র হিসেবে আমাদের কাজ হলো বাংলাদেশের আইনকে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেন রুল অব ল বাস্তবায়ন হয়। আইনের বিচার দীর্ঘ সময় হওয়ার কারণে, আইনজীবীর কাছে অনেকে যেতে ভয় পায়। আইনকে এমন একটা পর্যায়ে আনতে হবে যেন সবাই আদালতে আসে সাহায্যের জন্য। দেশকে একটা জায়গায় নিতে হলে নিরাপদ বিচার ব্যাবস্থা, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারা আইন জানে এবং আইনের ছাত্রেদর এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা আইন পড়ি এ দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে। মানুষ বুঝতে হবে যেন তারা ম্যায় বিচার পেয়েছে। সবশেষে বলতে চাই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য আইনকে ভালোভাবে জানতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর ২০২৩ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে মোট দশটি দল অংশগ্রহণ করেন। বিজয়ী দলের জন্য পুরস্কার হিসেবে ৬০০০ টাকা এবং রানারআপ দলের জন্য ৪৫০০ টাকা দেওয়া হয়।