নোমান বিন হারুন, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন হচ্ছে আজ। দীর্ঘ আট বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নয়া মেরুকরণ। পছন্দের প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন শিক্ষকরা। তিনটি প্যানেলে নির্বাচন করছেন শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের ১১(১) ধারা অনুযায়ী এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শুধু নির্বাচিত সিনেট সদস্যরা এ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিনজনের প্যানেল মনোনয়ন শেষে তা রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের কাছে পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতাবলে প্যানেলের যে কাউকে উপাচার্য হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেন। মোট ৮১ জন সিনেটর এবারের নির্বাচনে ভোট প্রদান করবেন।
জানা যায়, আজকের নির্বাচনে তিন সদস্যের সর্বমোট তিনটি প্যানেল এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ থেকে পৃথকভাবে দু’টি এবং ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর পক্ষ থেকে একটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে।
বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের নেতৃত্বে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’-র একাংশের পক্ষ থেকে ঘোষিত প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ্।
‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফীর নেতৃত্বে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহা এবং আইবিএর অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেনকে নিয়ে অপর আরেকটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে।
আর ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-র পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আমির হোসেনের নেতৃত্বে প্যানেলের বাকি সদস্যরা হলেন- প্রতœতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পৃথ্বিলা নাজনীন নীলিমা।
এদিকে, বুধবার হাইকোর্ট শুনানি শেষে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে ঘিরে আইনি জটিলতা নেই বলে আদেশ দিয়েছেন। নির্বাচনের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলম বলেন, ‘গণতান্ত্রিক উপায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নির্ধারণ করতে চাই। তাই ১২ আগস্ট জরুরি সিনেটে সিনেটরদের মতের ভিত্তিতে তিনজনের উপাচার্য প্যানেলের নামের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। সেটা আচার্য মহোদয়ের কাছে পাঠানো হবে। আচার্য মহোদয় তিনজনের মধ্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য নির্ধারণ করবেন।’
উল্লেখ্য, সিনেটে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মৌখিক নির্দেশনা পেয়ে জাবিতে তিন সদস্যের উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ প্রেক্ষাপটে হাতে পর্যাপ্ত সময় না থাকায় শুক্রবার সিনেটের বিশেষ ওই অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে যার একমাত্র এজেন্ডা তিন সদস্যের প্যানেল মনোনয়ন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের কার্য পরিচালনা বিধি (২০১৫) এর ৩ (খ-২) ধারানুযায়ী, যেকোনো সময় সিনেট অধিবেশন আহ্বান ও প্যানেল নির্বাচনের এখতিয়ার উপাচার্যের রয়েছে।
