জাবিতে গাছ কাটার ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থানে শিক্ষার্থীরা

প্রতিনিধি, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ‘সুন্দরবন’ এলাকায় বৃক্ষ নিধন ও নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে পথনাটক ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে এসব দাবি অযৌক্তিক দাবি করে অবিলম্বে নিজস্ব অর্থায়নে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাস বর্জন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) এর শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার জাবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে আইবিএ’র শিক্ষার্থীদের সকাল ৯টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। এ সময় আইবিএ এর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ পুনরায় সচল করার জন্য ৪ দফা দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলো হলো উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তদন্ত কমিটি গঠন অনতিবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রস্তাবিত জায়গায় আইবিএ ভবনের কাজ বহাল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। মাননীয় উপচার্যকর্তৃক স্থাপিত ভিত্তিপ্রস্তুর, যা দুষ্কৃতকারী দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে অতি সত্তর বিচারের আওতায় আনতে হবে। বেআইনিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের

প্রশাসনসহ আইবিএর পরিচালককে ৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করার জন্য সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। আইবিএ ভবন নির্মাণ চলাকালীন সময়ে যেকোনো ধরনের উদ্ভ‚ত অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।

অপরদিকে, বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে পথনাটক করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পথনাটক শেষে উপাচার্য বরাবর সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এলাকায় ভবন নির্মাণার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তত্ত¡াবধানে প্রায় ৫৬টি গাছ কেটে ফেলা হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রাণভ‚মি ও বিচিত্র বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষনিধন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্বকীয়তা ও সৌন্দর্য হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে বিধায় ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা উদ্বিগ্ন বোধ করছি।

স্মারকলিপিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলোÑছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এলাকায় যে স্থানে (সুন্দরবন) গাছ কেটে ফেলা হয়েছে সেখানে নতুন করে বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যাম্পাসে প্রাকৃতিক পরিবেশে যেকোনো উদ্দেশ্যে যেকোনো পরিবর্তন আনয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে উš§ুক্ত মতবিনিময়ের আয়োজন করতে হবে। যেকোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে যেখানে জীববেচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেখানে অবশ্যই আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী এনভায়রনমেন্টাল সার্ভে এবং এনভায়রনমেন্টাল ইম্পেক্ট এসেসমেন্ট নিশ্চিত করতে হবে।

তবে, ইনস্টিটিউটের জন্য নিজস্ব ভবন নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি দাবি করে আইবিএর পরিচালক অধ্যাপক কে এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষকদের কক্ষের সংকট আছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে এটা জানিয়ে আসছি।

প্রশাসন আমাদের এই জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

আর গাছ কাটার বিষয়টা ঠিকাদার কোম্পানির ওপর নির্ভর করে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস জানে। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই কাজ শুরু করা করা বলে জানি।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০