জাবিতে মাদক সরবরাহকারী সন্দেহে তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ

প্রতিনিধি জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা তিন বহিরাগতকে মাদক সরবরাহকারী সন্দেহে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরাফাত ও ৪১ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরমান খান যুব’র সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ফেরত যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেট) তাদেরকে আটক করেন প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন। এসময় প্রক্টোরিয়াল টিম উপস্থিত হয়ে সন্দেহকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে করলে তারা তিনজন জানান, তারা চীনের বেইজিংয়ের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং জাবিতে ঘুরতে এসেছিলেন। নিরাপত্তা কর্মী তাদের গেট দিয়ে প্রবেশে বাঁধা প্রদান করলে বাকবিতন্ডায় জড়ান তারা।

একপর্যায়ে নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতি হয় তাদের। পরে তারা আরাফাতের ( ৪২ ব্যাচ) ও যুব’র (৪১ ব্যাচ) সাহায্যে এক নিরাপত্তা কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসেন এবং তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখান। অভিযুক্ত তিনজন হলেন আরিফ শাহ, মেহেদী হাসান, রাসেল শেখ। তাদের একজনের বাসা ঠাকুরগাঁও ও বাকি দুজনের বাসা মুন্সিগঞ্জ জেলায়।

প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় গার্ডকে বাধা প্রধান করলে মোটর সাইকেল আরোহী ৮ জন গার্ডকে ধাক্কা ও মারধর করে এবং ৪১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ধ্রুবকে নিয়ে পরবর্তিতে গার্ডের বাসায় যেয়ে হত্যার হুমকি দেয়।

এছাড়া তার কাছে ভারি ব্যাগ ছিলো এবং তার কাছে দামি মাদক থাকতে পারে আমাদের এমন সন্দেহ হয়। পরে প্রক্টোরিয়াল টিমসহ আমরা পুলিশকে ফোন দিলে পুলিশ এসে তিন জন অভিযুক্তকে নিয়ে যায়। এসম প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান, সহকারী প্রক্টর রনি হোসাইন ও মনির উদ্দিন শিকদার উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের কেনাবেচা ও মাদকসেবী বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, গত বছর ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের জন্য রাজধানীর বংশাল থানা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে মাদক আনতে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।

একই বছর মওলানা ভাসানী হলের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে মাদকদ্রব্য পরিবহনেও ব্যবহার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স। সেসময় মাদক পরিবহনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি একটি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রিকশাচালক আব্দুল কুদ্দুস মারা যান। তবে এসব ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

উল্লেখ্য, আরমান খান যুবর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের সিন্ডিকেট ও মওলানা ভাসানী হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে ‘টর্চার সেল’ পরিচালনা করার অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রত্ব শেষ হলেও হলের ওই কক্ষে তিনি অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। এমনকি সেখানে বহিরাগতদের নিয়ে নিয়মিত মাদক সেবন করেন যুব।

এছাড়া মাদক ব্যবসায়ী ও বহিরাগতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে টর্চার করেন তিনি। এর আগে, গত ১০ সেপ্টেম্বর বহিরাগত এক যুবককে ১২৬ নম্বর কক্ষে এনে মারধর করেন যুব। তার মারধরের শিকার হয়ে ওই যুবক ‘অস্বাভাবিক’ আচরণ করতে থাকেন।
চলতি বছরের ১৩ আগস্ট মওলানা ভাসানী হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান ইমন বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের আপন ছোটভাই আরমান খান যুবর বিরুদ্ধে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০