জাবিতে শিক্ষার্থীদের গণজোয়ার: ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

প্রতিনিধি, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগত সন্ত্রাসী ও পুলিশের যৌথ হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল ও গণজোয়ার ঘটেছে।মিছিল শেষে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক আড়াই ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি মৌন মিছিল বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মহাসড়ক ধরে প্রান্তিক গেট, বিশমাইল হয়ে পুনরায় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।

এসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শহীদ মিনারে জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী সকল স্কুল কলেজ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয়, ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাভার মডেল কলেজ, ধামরাই কলেজ সহ প্রায় ১০ টি স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হন। মৌন মিছিলে পাঁচ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী যুক্ত হন। পরে বেলা তিনটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান জাবি শিক্ষার্থীদের উপর এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। হামলার সঙ্গে যুক্ত সকলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

এদিকে সোমবার রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় এক জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয় জাবির রেজিস্ট্রার ভবনে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমানকে সভাপতি করে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন সাক্ষরিত এক জরুরি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়াও সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ, বহিরাগত ও অছাত্রদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আবাসিক হলে বহিরাগত ও অছাত্ররা অবস্থান করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সভায় ১৫ জুলাই রাতে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং সকল চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সভায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে স্ব-স্ব হলে অবস্থান করা এবং যে কোনো প্রকার গুজব-অপপ্রচার এবং নাশকতামূলক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল গেইটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গেইট বন্ধ রাখা এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে প্রভোষ্টসহ হল প্রশাসনকে হলে অবস্থান করে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই রাতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল সংলগ্ন এলাকায় এবং ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর হামলা, উপাচার্যের বাসভবন ও গাড়ি ভাংচুরে জড়িতদের চিহ্নিত এবং শান্তির সুপারিশ করার জন্য গঠিত এই তদন্ত কমিটিকে আগামী ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০