জাবি শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা সড়ক অবরোধ

কোটা বাতিলসহ চার দাবি

প্রতিনিধি, জাবি : সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ চার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে ছাত্র সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ১০ মিনিট অবরোধ শেষে সড়ক ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবীর এ সময় বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছি রাস্তা ছেড়ে দিতে, কারণ অনেক মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। আন্দোলন যেহেতু একটি গণতান্ত্রিক ধারা; এক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীরা সহনশীলতা দেখাবে সেটিও আশা করব।’

শিক্ষার্থীদের চারটি দাবির মধ্যে রয়েছেÑ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রæত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। এছাড়া দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আন্দোলনরত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নামে কোটা চালু করে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদিও তারা কোনো প্রকার বৈষয়িক লাভের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করেননি। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবমাননাকর এই কোটা ব্যবস্থা চাই না। এই মহান সংগ্রামে চ‚ড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলমান থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী ৪ জুলাই আপিল বিভাগে আমাদের দাবির সঙ্গে সংগতি রেখে রায় আসবে বলে আমরা আশা করি। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্সসূচিতে যাব।’

আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের জাহিদুল ইমন বলেন, ‘আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই অসাম্য রায়ের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা ওই পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে।

তবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে কোটা ব্যবস্থা আগের মতোই বহাল থাকবে বলে ওই পরিপত্রে বলা হয়। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।

ওই আবেদনের চ‚ড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। ওই রায় স্থগিতে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০