নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে এসব কথা আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, তারা যেখানেই যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতসহ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে বিএনপির গভীর বন্ধন রয়েছে।
গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গত রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করি না। কিন্তু তাদের যে কৌশল, অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মতÑঠিক কমিউনিস্টদের মতোই অনেকটা, খেয়াল করে দেখবেন। তাদের স্টাডি সেল আছে। তাদের যে ছাত্রশিবির, তাদের সেল আছে। তাদের লেখাপড়া করতে হয়, বইপত্র পড়তে হয়। জ্ঞানের চর্চা যদি না থাকে, জ্ঞানচর্চা ছাড়া কখনও সফল হতে পারবেন না।’
বিএনপির মহাসচিবের এই বক্তব্যের জবাব দিতেই এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
মির্জা ফখরুলের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জামায়াত নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা সুস্পষ্টভাবে অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক। জামায়াতের রাজনীতি বাংলাদেশের মূল চেতনা, মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও স্বাধীনতার মূল্যবোধের পরিপন্থি। রাজনীতির এই ধারা বারবার দেশবিরোধী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক কখনোই ৩০ লাখ শহিদের রক্তে রচিত সংবিধান ও রাষ্ট্রের মৌলিক চেতনাবিরোধী রাজনীতিকে কোনোভাবেই স্বীকৃতি দিতে পারে না। যাদের রাজনীতি দেশের ভিত্তিমূলে আঘাত হানে, তাদের কৌশলও কখনও বিজ্ঞানসম্মত বা যৌক্তিক হতে পারে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন, মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে প্রগতিশীলতার মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে রাখা তার আসল চেহারা উšে§াচিত হয়েছে। একই সঙ্গে তার বক্তব্যে উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি দেয়ার দুরভিসন্ধি প্রকাশিত হয়েছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এ দেশে স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবেই বিএনপির সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী এই অপশক্তির গভীর আঁতাত ও সম্পর্ক রয়েছে, যে কারণে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা তাদের প্রতি একধরনের দায়বদ্ধতা অনুভব করেন এবং সর্বদা পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকেন। স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির রাজনীতির সামাজিক বৈধতা ও স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বরাবরই চেষ্টা চালিয়ে আসছে। বিএনপির রাজনীতি এই চক্রেই আবর্তিত। তারা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে নিজেদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শবিরোধী কোনো রাজনৈতিক অপশক্তিকে আওয়ামী লীগ কখনও স্বীকৃতি দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না।