জামালগঞ্জে প্রতারণা মামলায় ২ জন কারাগারে

প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের ছেলাইয়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আতিকুর রহমান একই গ্রামের রিয়াদ হাসান সানু ও নিজাম নুরের কাছ থেকে নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকায় ক্রয়কৃত ট্রাকটি স্টাম্পের মাধ্যমে ক্রয় করলেও প্রতারণার মাধ্যমে নিজাম নুর গাড়িটি তার নামে করে নেয়ার মামলা দ্বিতীয় দফায় নিজাম নুর ও তার আপন চাচাতো ভাই দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা প্রধান আসামি রিয়াদ হাসান সানুর জামিন না-মুঞ্জর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল রোববার সকালে প্রতারক নিজাম নুর ও রিয়াদ হাসান (সানু) আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামালগঞ্জ জোনে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বেগম ইসরাত জাহান তাদের দুজনের জামিন নামুঞ্জর করে কারাাগরে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন।

এই প্রতারণার ঘটনায় গত বছরের ২১ আগস্ট ছেলাইয়া গ্রামের মো. আবুল বাতেনের ছেলে প্রতারিত প্রবাসী মো. আতিকুর রহমানের আপন ছোট ভাই মো. আসাদুর রহমান বাদী হয়ে একই গ্রামের প্রতারক রিয়াদ হাসানকে প্রধান আসামি করে গ্রামের, নিজাম নুর ও তার ভাই মিজানুর এই তিনকে আসামি করে আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ জোনে একটি মামলা দায়ের। যার মামলা নং-সি.আর-২০৩/২৩ জামালগঞ্জ।

এর এক মাস আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার দুই নম্বর আসামি প্রতারক নিজাম নুর আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামালগঞ্জ জোনে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বেগম ইসরাত জাহান তার জামিন নামুঞ্জর করে কারাাগরে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রথম দফা এক সপ্তাহ জেল খেটে নিজাম নুর গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পেলে ও তিনি তার আপন চাচাতো ভাই মামলার প্রধান আসামি প্রলাতক রিয়াদ হাসান সানুকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে উপস্থিত হওয়ার শর্তে তাকে বিজ্ঞ আদালত জামিন দিয়েছিলেন।

আটককৃতরা হলেন জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের ছেলাইয়া গ্রামের মিরাশ আলীর ছেলে প্রতারক নিজাম নুর এবং মামলার এক নম্বর আসামি মুক্তার আলীর ছেলে রিয়াজ হাসান (সানু) । তিন নম্বর আসামি নিজাম নুরের ভাই মিজানুর রহমান জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৬/৯/২০২২ইং তারিখের মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলাইয়া গ্রামের মো. আতিকুর রহমান দেশে এসে একটি ট্রাকটি ১০০ টাকা মূল্যের তিনটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে সাক্ষীর উপস্থিতি ও স্বাক্ষর নিয়ে একটি মালবাহী ট্রাকটি একই গ্রামের মো. মুক্তার আলীর ছেলে মো. রিয়াদ হাসান (সানু)র কাছে হতে ক্রয় করেন। ট্রাকটি বিক্রয়ের রসিদপত্র ১ জন গ্রহীতা, ১ জন দাতা ১০০ টাকার ৩টি স্ট্যাম্প ও সাক্ষীদের স্বাক্ষর দ্বারা সম্পাদিত রয়েছে। গত ০৫/১১/২০২২ইং তারিখে জামালগঞ্জ মসজিদ মার্কেটে লিখিত স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আতিকুর রহমান নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা পরিশোধ করে মালবাহী ট্রাকটি দুইনং আসামি প্রতারক নিজাম নুরের উপস্থিতিতে এক নম্বর আসামি মো. রিয়াদ হাসান (সানু)র কাছে থেকে ক্রয় করেন।

এ সময় ট্রাক মালিক, রিয়াদ হাসান জানান, ট্রাকটির মূল কাগজ কোম্পানিতে থাকায় কিছুদিন পর আতিকুরের নামে কাগজপত্রগুলো করে দেবেন বলে অঙ্গীকার করেন। প্রবাসী আতিকুর রহমান সরল বিশ্বাসে এবং বিক্রেতা মো. রিয়াদ হাসান (সানু) ছেলাইয়া একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে তার কথা বিশ্বাস করে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে সাড়ে ৯ লাখ টাকা নগদ পরিশোধ করে ট্রাকটি ক্রয় করেন। গত ১ আগস্ট ২০২৩ইং তারিখ পর্যন্ত খরিদকৃত ট্রাকটি বাদী আতিকুর রহমানের ছোটভাই আসাদুরের কাছে হস্তান্তর করেন এবং গাড়িটিতে ড্রাইভার রেখে ট্রাক চালিয়ে কিছুদিন খরিদদার আতিকুর রহমানের পরিবার আয়-রোজগার করে সংসার পরিচালনা করে আসছিলেন। এর কিছুদিন পর গত ০১/০৮/২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি হঠাৎ করে মো. রিয়াদ হাসান ( সানু), আপন চাচাতো ভাই প্রতারক নিজাম নূর ও  মিজানুর পুলিশ নিয়ে ক্রয়কৃত ট্রাকটি জোরপূর্বক তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। প্রবাসী আতিকুর রহমানের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে গাড়িটি পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে রিয়াদ ও নিজাম নুর তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আইন উদ্দিন প্রতারণা মামলায় দুই আসামির জামিন নামঞ্জুরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রবাসী আতিকুর রহমান ঘটনার তারিখে সাড়ে ৯ লাখ টাকায় আসামি রিয়াদ হাসান ও নিজাম নুরের কাছ থেকে ট্রাকটি ক্রয় করেছিলেন। আটককৃতদের প্রতারণার কঠোর শাস্তি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০