জামিনে মুক্তি পেলেন মির্জা আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মামলায় সাড়ে তিন মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার আগে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হলে কয়েকশ নেতাকর্মী করতালি দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। এ সময় ‘মির্জা আব্বাস ভাইয়ের ভয় নাই, আমরা আছি তোমার সাথে’, ‘মির্জা আব্বাস ভাইয়ের মুক্তি আন্দোলনের শক্তি’, প্রভৃতি সেøাগান দেন কর্মীরা।

হাত তুলে নেতা-কর্মীদের অভিবাদন জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্র ফেরানোর মুক্তির আন্দোলন চলবে।’

কারাগার চিকিৎসার ‘অপ্রতুলতার কারণে’ নেতা-কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অভিযোগ করে তাদের সুচিকিৎসার দাবি জানান আব্বাস।

জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ

ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন দুপুরের আগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।

পরে তা ছড়িয়ে পড়ে শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড়ে। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।

সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ বক্সে আগুন দেয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেয়া হয়, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় আরও ডজনখানেক যানবাহনে। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে।

দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘাতে প্রাণ যায় যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোল্লার। এর দুদিন বাদে ৩১ অক্টোবর রাতে ঢাকার শহীদবাগের একটি বাসা থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তার আইনজীবী মহিউদ্দিন জানান, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীর পল্টন, শাহজাহানপুর, রমনা ও রেলওয়ে থানায় কয়েক ডজন মামলা হয়। এর মধ্যে ১১টি মামলায় মির্জা আব্বাসকে আসামি করা হয়।

গত ১ নভেম্বর এক মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয় এবং আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বাকি ৯টিতে রাষ্ট্রপক্ষ গ্রেপ্তার না দেখানোয় তার জামিনের আবেদন শুনানি সম্ভব হচ্ছিল না। সে কারণে গত ২৪ জানুয়ারি ৯টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ জামিনের আবেদন করা হয়।

এরপর ১ ফেব্রুয়ারি সেই আবেদন গ্রহণ করেন আদালত। বিভিন্ন দিনে ১০টি মামলার জামিন হলেও বাকি থাকে রেলওয়ে থানার একটি মামলা।

সোমবার শুনানি শেষে ঢাকার বিচারিক হাকিম জুলহাস উদ্দিন ওই মামলায়ও জামিন মঞ্জুর করলে মির্জা আব্বাসের মুক্তির পথ খোলে।

মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী জানান, সবকটি মামলায় জামিন হওয়ার পর বিকালে জামিননামা কারাগারে পৌঁছানোর পর এই বিএনপি নেতাকে মুক্তি দেয়া হয়।

এ সময় মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী কারাগারের বাইরে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পান।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০