প্রতিনিধি, পাবনা: পাবনায় ঈশ্বরদী উপজেলায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণখেলাপির মামলায় জেলে যাওয়া ১২ জনসহ পরোয়ানাভুক্ত ৩৭ কৃষককে জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২- এর বিচারক মো. শামসুজ্জামান এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন আদালতে ব্যাংকের নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুল মজিদ।
বেলা ১১টার দিকে প্রথমে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাওয়া ১২ কৃষকের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলায় বাকি ২৫ জনকে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন বিচারক। নির্দেশনার পরই কৃষকরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদেরও জামিনের আদেশ দেন বিচারক।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কাজী সাজ্জাদ ইকবাল, আইনজীবী সাইদুর রহমান এবং আইনজীবী মইনুল ইসলাম।
ঈশ্বরদী থানা সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের ৩৭ জন কৃষক একটি সমিতির নামে যৌথ ঋণ নিয়েছিলেন। সেই ঋণ পুরো পরিশোধ না হওয়ায় ২০২১ সালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
পরবর্তী সময় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ১২ কৃষককে গ্রেপ্তার করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
মাত্র ২৫-৩০ হাজার টাকা ঋণখেলাপির দায়ে ১২ প্রান্তিক কৃষক জেলে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, গ্রেপ্তাররা অধিকাংশই প্রান্তিক কৃষক। তারা একেকজন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছিলেন। তাদের অনেকেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, ঋণের টাকা তারা পরিশোধ করেছেন। মামলার বিষয়টিও তারা জানতেন না।
এ বিষয়ে সমবায় ব্যাংকের পাবনা জেলা শাখার তৎকালীন ম্যানেজার ও মামলার বাদী মোজাম্মেল হক বলেন, ঋণখেলাপির দায়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক মামলা করা হয়। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মাত্র।
আসামি পক্ষের আইনজীবী কাজী সাজ্জাদ ইকবাল জানান, জামিন পাওয়ার পর আনন্দ ও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।