কোম্পানির কাছে কোনো তথ্য নেই

জিকিউ বলপেনের শেয়ারের ফের সন্দেহজনক দর বৃদ্ধি

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: আবার অস্বাভাবিকহারে দর বাড়ছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি জিকিউ বলপেনের শেয়ারের। সাম্প্রতিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, কয়েক কার্যদিবসের মধ্যে শেয়ারটির দর লাগামহীনভাবে বেড়েছে। বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখছেন বাজার সংশ্লিষ্ট থেকে শুরু করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, মাত্র তিন কার্যদিবসের ব্যবধানে শেয়ারদর বেড়ে ১১১ টাকা থেকে ১৩০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে বাজারে গুঞ্জন রয়েছে এ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে আবারও কারসাজির ঘটনা ঘটছে। কোনো একটি চক্র কৃত্রিমভাবে বাড়াচ্ছে এর দর। যে কারণে অস্বাভাবিকহারে বাড়ছে এ শেয়ারদর।

বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হলে কোম্পানি সচিব উজ্জ্বল কুমার সাহা শেয়ার বিজকে বলেন, শেয়ারদর কেন বাড়ছেÑতা আমাদের জানা নেই। তাছাড়া শেয়ারদর কেন বাড়ে বা কমে, তা আমাদের জানার কথা নয়। আমাদের কাছে দর বৃদ্ধি পাওয়ার মতো কোনো সংবেদনশীল তথ্য নেই, এতটুকুই বলতে পারি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে আপনাদের দর বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে কোনো নোটিস দেয়া হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ডিএসই আমাদের কাছে কোনো নোটিস পাঠায়নি।

এর আগে গত বছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জিকিউ বলপেনের শেয়ারের কৃত্রিমভাবে দর বাড়ানোর খোঁজ পায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইস)। তখন ১০টি বিও অ্যাকাউন্টের ম্যধ্যমে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। এ কারণে তখন এসব অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। পাশাপাশি গঠন করা হয় একটি তদন্ত কমিটি। যখন এ শেয়ারদর ছিল মাত্র ৮২ টাকা তখন থেকেই এই অ্যাকাউন্টগুলোয় অস্বাভাবিক লেনদেন শুরু হয়। তখন থেকেই এ কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সন্দেহ হয়। এ সময়ও কোম্পানির পক্ষ থেকে ছিল না কোনো ধরনের সংবেদনশীল তথ্য। কিন্তু তারপরও কোম্পানিটির শেয়ারদর টানা বেড়ে ২৪৮ টাকায় চলে যায়। পরে বিএসইসি ১০ অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করে। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়েছিল শেয়ারদর। এই ১০ অ্যাকাউন্টে ছিল কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩১ শতাংশ। এবারও তেমন কোনো ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আগে এ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধিতে কারসাজির ঘটনা ঘটে। এখন তেমন কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা আমাদের জানা নেই। তবে সন্দেহজনক লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলো আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। কোনো অনিয়ম পেলে আমরা এর ব্যবস্থা নেব।

কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থাও নাজুক। ধারাবাহিকভাবে লোকসান দিচ্ছে কোম্পানিটি। ২০১৯ সালে কোম্পানিটির এক কোটি ৫৩ লাখ টাকা লোকসান হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে কোম্পানির লোকসান বেড়ে হয় ছয় কোটি ৮২ লাখ টাকা। সর্বশেষ অর্থবছরে এ প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের পাঁচ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি শেয়ার ধারণ করছেন। তাদের কাছে রয়েছে মোট ৫৬ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া পরিচালকদের কাছে রয়েছে কোম্পানির ৪১ শতাংশ ৮৮ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে এক দশমিক ৭ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে রয়েছে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ শেয়ার।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০