শেয়ার বিজ ডেস্ক: নোট বাতিল নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা ও জিএসটি বিতর্ক কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতের অর্থনীতি। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে দেশটির জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়ায় সাত দশমিক দুই শতাংশ, যা গত পাঁচ প্রান্তিকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর ফলে চীনকে টপকে বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির অর্থনীতি এখন ভারতের। খবর এনডিটিভি, আনন্দবাজার।
খবরে বলা হয়েছে, কৃষি, উৎপাদন শিল্প, নির্মাণ ও পরিকাঠামোয় ভালো ফলের কারণে চীনকে টপকে বিশ্বের দ্রুততম প্রবৃদ্ধির অর্থনীতি এখন ভারত। আগের তিন মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আর্থিক উপদেষ্টা কমিটি দাবি করেছে, এর মাধ্যমে বর্তমান সরকারের সাহসী সংস্কারের ফল আসতে শুরু করেছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে চীনের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ছয় দশমিক আট শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির এ হারে খুশি ভারতের ব্যবসায়ীরাও। আর এর মাধ্যমে দেশটির অর্থনীতির পুরোদস্তুর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলে দাবি করেছে দিল্লি। ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কলকারখানায় উৎপাদনের সুদিন ফেরার সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণ ও পরিকাঠামো শিল্পের জন্য এটা ভালো ফল নিয়ে আসবে।
কিন্তু এর মধ্যেও সংশয় রয়েই গেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, এ সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে সুযোগ হিসেবে নিচ্ছে মোদি সরকার। এটা আগের ইউপিএ সরকারের সময় স্বাভাবিক ছিল বলেও তারা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, আগের আর্থিক বছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল সাত দশমিক এক শতাংশ। সেখানে এবার তার পূর্বাভাস ছয় দশমিক ছয় শতাংশ। এছাড়া বাজেটের আগে আর্থিক সমীক্ষায় সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির হার ছয় দশমিক ৭৫ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। এ তথ্য সামনে নিয়ে এসে বিষয়টিকে পিছু হটা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
পুরো আর্থিক বছরের জন্য রাজস্ব ঘাটতির যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, গত জানুয়ারি মাসে তা ছাপিয়ে গেছে। আর্থিক বছর শেষ হওয়ার দু’মাস আগেই তা দাঁড়িয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ১১৩ দশমিক সাত শতাংশ। এ ঘাটতি নিয়ে সতর্কও করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাবেক গভর্নর ডি সুব্বারাও। আর কলকাতা চেম্বার অব কমার্সের সভায় সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেছেন, আট-নয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছোঁয়ার থেকে দীর্ঘ মেয়াদে তা ধরে রাখা কঠিন।
এর আগে ইউপিএ সরকারের আমলে বড় সময়জুড়ে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ছিল সাত শতাংশেরও বেশি। ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৬-০৭ অর্থবছরের মধ্যে আট থেকে ৯ দশমিক পাঁচ শতাংশের মধ্যে ছিল। বর্তমান মোদি সরকারের সেই সাফল্য কোথায় এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। ক্ষমতায় বসার আগে সাত থেকে আট শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে খুব সহজ বলে দাবি করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এখন সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধিকেই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর দাবি মোদি সরকারের।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ক্ষমতায় আসার সময় দেশটির অর্থনীতিকে ভালো অবস্থায় পেয়েছিল বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকার সঙ্গে সঙ্গে মন্দাও কেটে গিয়েছিল।