জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.২৫% মাথাপিছু আয় ২৮২৪ ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবের তুলনায় দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত এ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর মহামারির ধাক্কায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই প্রবৃদ্ধি নেমে গিয়েছিল ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে। এছাড়া মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে দুই হাজার ৮২৪ ডলার হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ তথ্য জানিয়েছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসের হিসাব ধরে প্রবৃদ্ধির এই সাময়িক প্রাক্কলন করেছে বিবিএস। তাতে দেখা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে সাময়িক হিসাবে স্থির মূল্যে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

এ অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছিল। পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রাক্কলন বলছে, বাজেটের ওই লক্ষ্যকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবারের প্রবৃদ্ধি।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, চলতি অর্থবছরের সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে দুই হাজার ৮২৪ ডলারে পৌঁছেছে, যা গত অর্থবছরের চ‚ড়ান্ত হিসাবে ছিল দুই হাজার ৫৯১ ডলার। সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী এটি ছিল ৪১৬ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া জিডিপির অনুপাতে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন বলা হয়েছে, এবারের মোট দেশজ উৎপাদনে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২ দশমিক ২০ শতাংশ। এর মধ্যে শস্য উপখাতে ১ দশমিক ০৬ শতাংশ, পশুপালনে ৩ দশমিক ১০ শতাংশ, বন উপখাতে ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং মৎস্য খাতে ২ দশমিক ০৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাময়িক হিসাবে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং নির্মাণ খাতে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে ধরা হয়েছে।

বিবিএসের হিসাবে সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছর শিল্প খাতে গত অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। সেবা খাতে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা খাতে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ, যানবাহন খাতে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ, ব্যাংক ও বিমা খাতে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ, শিক্ষা খাতে ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ ও স্বাস্থ্য খাতে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। সার্বিকভাবে সেবা খাতে গত অর্থবছরের তুলনায় উৎপাদন ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ বাড়বে বলে ধরা হয়েছে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি না হলেও অনেকটাই পুনরুদ্ধার হয়েছে। তাই এ প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া জিডিপির হিসাব বিবিএসের চেয়ে ভালো কেউ করার মতো নেই। আমরা বিবিএসের হিসাবটাই নেব। তাই বিবিএসের ওপরই আমাদের নির্ভর করতে হবে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০