জিপন ট্রিপল প্লে সার্ভিসেও গ্রাহক পাচ্ছে না বিটিসিএল

হামিদুর রহমান : প্রচার না থাকায় জনপ্রিয় হচ্ছে না বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশনের (বিটিসিএল) নতুন ইন্টারনেট সেবা ‘জিপন’ (গিগাবাইট প্যাসিভ অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক) ট্রিপল প্লে সার্ভিস। কর্মীদের যথাযথ মনিটরিং না থাকায় বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন এ সেবাটি আশানুরূপ গ্রাহক পায়নি প্রতিষ্ঠানটি।

বিটিসিএলের তথ্যমতে, গত অর্থবছরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে নতুন ইন্টারনেট সেবা জিপন ট্রিপল প্লে সার্ভিসটির সেবা শুরু করে বিটিসিএল। দুই শহরে সেবাটির বর্তমানে সংযোগ রয়েছে প্রায় ৬০০’র মতো। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির এডিএসএল (ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট) গ্রাহক প্রায় ১৯ হাজার ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার রয়েছে প্রায় ৮৫০টির মতো।

জানা যায়, বিটিসিএল বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে আধুনিক টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি ‘জিপন’-এর মাধ্যমে ট্রিপল প্লে সার্ভিস চালু করে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে টেলিফোন, উচ্চগতির ইন্টারনেট, আইপিটিভি ভিডিও, অনলাইট গেমিং প্রভৃতি সার্ভিস প্রদান করছে প্রতিষ্ঠানটি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে জিপনের মাধ্যমে দুই এমবিপিএস, চার এমবিপিএস, ছয় এমবিপিএস ও ১০ এমবিপিএস পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়।নতুন এ সেবাটি পেতে গ্রাহকের প্রতিটি সংযোগের জন্য খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার টাকা।

বিটিসিএলের তথ্যমতে, বর্তমানে এডিএসএল সাত মহানগর ছাড়াও ৬৪ জেলার প্রায় সবগুলো উপজেলায় ইন্টারনেট পোপের মাধ্যমে লিজডলাইন ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এজন্য দেশব্যাপী শতাধিক ইন্টারনেট পোপ স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এ সেবা সম্প্রসারণের কাজ গেল বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। কাজ শেষ হলেই এর মাধ্যমে আইআইজি, আইএসপিসহ যে কোনো বাল্ক ইউজার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পাঁচ এমবিপিএস কিংবা তার ঊর্র্ধ্বে যে কোনো পরিমাণ ব্যান্ডউইথ অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার শেয়ার বিজকে বলেন, ‘বিটিসিএলের ইন্টারনেট সেবার মান ভালো হলেও প্রচার না থাকায় তা জনপ্রিয় হচ্ছে না। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির নতুন ইন্টারনেট সেবা জিপন ট্রিপল প্লে সার্ভিসটি অন্যান্য আইএসপি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ভালো সেবা দিচ্ছে।’ সেবাটি তিনি নিজেও ব্যবহার করছেন বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, এডিএসএল ব্রডব্যান্ড ও জিপন ট্রিপল প্লে সার্ভিসের সর্বোচ্চ ইন্টারনেট গতি ১০ এমবিপিএস।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিটিসিএল দুই এমবিপিএস পর্যন্ত গতির ইন্টারনেট সংযোগ দিচ্ছে পুরোনো কপার তারের মাধ্যমে, যা সাধারণ ডায়ালআপ ইন্টারনেটের ৩৫ গুন। বাসার ল্যান্ডফোনের তারের মাধ্যমেই ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া হয়। যেটি একই সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। আর ডায়ালআপ সংযোগের মতো ডায়াল করে ইন্টারনেটে যুক্ত করতে হয় না, যে কারণে গ্রাহককে টেলিফোনে কথা বলার জন্য টাকা প্রদান করতে হয় না। অথচ এত সুবিধা থাকার পরও গ্রাহকবান্ধব হচ্ছে না সেবাটি।

কয়েকজন বিটিসিএল গ্রাহকের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নে ব্যর্থ হওয়ায় বিটিসিএল তার গ্রাহক ক্ষমতার পুরোপুরি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেলফোনের সহজলভ্যতা এবং বিটিসিএলের সংযোগ গ্রহণ ও পরবর্তী সেবা দিতে সংস্থাটির অপেশাদারি মনোভাব গ্রাহকের আগ্রহ নষ্ট করে দিয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০