নিজস্ব প্রতিবেদক: নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে জীবন বীমা করপোরেশনের এমডি জহুরুল হকসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জীবন বীমা করপোরেশনের তিন পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে আজ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় জীবন বীমা করপোরেশনের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (অতিরিক্ত সচিব) মো. জহুরুল হক ও সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন), মোহাম্মদ মাহবুবুল আলমকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তে আর কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জীবন বীমা করপোরেশন উচ্চমান সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পরীক্ষার এমসিকিউ প্রশ্নপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রে অভিনব পন্থায় প্রশ্নকর্তাদের প্রস্তুতকৃত প্রশ্ন এবং তার সঠিক উত্তর নিজের মতো করে প্রশ্নপত্রের মধ্যে সাজিয়ে তা ছাপিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে তা চাকরিপ্রার্থীদের কাছে সরবরাহ করে পরীক্ষা নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে পারস্পরিক যোগসাজশে তাদের ওপর অর্পিত সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনকভাবে বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের লোকদের নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে প্রশ্নের উত্তরের ধারাবাহিক ক্রমবিন্যাস পরিবর্তন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজীর নেতৃত্বে একটি দল জীবন বীমা করপোরেশন অফিসে অভিযান চালায়।
জীবন বীমা করপোরেশনের উচ্চমান সহকারীসহ ৫১২ পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসসহ বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ ও ৪ সেপ্টেম্বর করপোরেশনের উচ্চমান সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ও অফিস সহায়ক পদে ৫১২ জন নিয়োগের জন্য এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহুরুল হকের বিরুদ্ধে এসব পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পেয়েছে দুদক। এ নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্র করে অন্তত ৪০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। এসব পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করতে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে করপোরেশনের চুক্তি হলেও এমডির পছন্দের লোকদের দিয়ে একটি কমিটি করে প্রশ্ন তৈরি করে ৫১২ পরীক্ষার্থীর কাছে তা বিলি করা হয়। এজন্য তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আট লাখ টাকা করে অগ্রিম নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এমডির সঙ্গে করপোরেশনের আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত আছেন বলেও অভিযোগে বলা হয়।