নিজস্ব প্রতিবেদক: ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির পারদ জুন শেষে কিছুটা নিন্মমুখী হয়ে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশে নেমেছে; আগের মাসের চেয়ে যা ২০ শতাংশীয় পয়েন্ট কম।
মে মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ১০ ছুঁইছুঁই হয়ে ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে পৌঁছেছিল। সেখান থেকে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের শেষ মাসে তা কিছুটা কমার তথ্য দিল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এর আগের মাস এপ্রিলে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে এ হার ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ।
গতকাল সোমবার প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির যে হার দাঁড়িয়েছে তাতে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুনে দেশে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, সেই পণ্য বা সেবা গত জুনে কিনতে বা পেতে ভোক্তাকে ১০৯ টাকা ৭৪ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। অর্থাৎ এক বছর আগের চেয়ে গত মাসে ব্যয় বেশি করতে হয়েছে ৯ টাকা ৯৪ পয়সা।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরের জুন শেষে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতির সাধারণ হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ০২ শতাংশে। সরকার গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরলেও তার চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে মূল্যস্ফীতি। এর আগের অর্থবছর ২০২১-২২ সালে যা ছিল ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির এমন ঊর্ধ্বমুখী ধারার মধ্যেও মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে ধরে রাখার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে।
গতকাল প্রকাশিত সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুনে খাদ্য ও খাদ্যবর্হিভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় কাছাকাছি। খাদ্যে বাড়লেও কমেছে খাদ্য-বহির্ভূত উপখাতে।
খাদ্যে মূল্যস্ফীতি অনেকটা বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ, আগের মে মাসে যা ছিল ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
বিবিএস বলছে, জুনে শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি ছিল। আগের মাসে যা ছিল উল্টো। মে মাসে গ্রামীণ এলাকার চেয়ে শহরে মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি ছিল।
জুনে শহরে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং গ্রামে যা ছিল ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। মে মাসে শহরাঞ্চলে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতি ও ডলারের ব্যাপক মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের বাজারে সবধরনের পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যাওয়ায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম থেকেই মূল্যস্ফীতি বাড়ছিল। এর মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রভাবও পড়ে মূল্যস্ফীতিতে।
এতে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি আগস্টে পৌঁছায় এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে। এরপর কিছুটা কমলেও মে মাসে তা আবার বেড়ে ১১ বছরের সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে পৌঁছায়।