নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২০৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ অঙ্ক গত বছরের জুলাই মাসের চেয়েও ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। বর্তমান বিনিময়হার (প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে রেমিট্যান্সের অর্থের পরিমাণ ১৯ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা, যা গত ১৪ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স নিয়ে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রণোদনা বাড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি সরকার বিভিন্ন নীতি-সহায়তা দিচ্ছে। এছাড়া দেশে ডলারের দাম বেশি হওয়ার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসীরা বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন। তাই নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৩৩ কোটি ডলার। বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে তিন কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭২ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
বরাবরের মতো বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৪১ কোটি ডলার। এছাড়া ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ১৫ কোটি ডলার, ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১০ কোটি ডলার, সাউথইস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ডলার এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আট কোটি ডলার রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই হাজার ১০৩ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা রেকর্ড দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে রেমিট্যান্সে সরকারি প্রণোদনার হার দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। দেশে বড় অংকের রেমিট্যান্স পাঠানোর শর্তও শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে পাঁচ লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্স পাঠালে তার বিপরীতে প্রণোদনা পেতে হলে আয়ের উৎস দেখিয়ে নথিপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হতো। সম্প্রতি সে শর্তও শিথিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৩০ জুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এতে বলা হয়েছে, রেমিট্যান্স ঊর্ধ্বমুখী হবে এবং চলতি অর্থবছর গত অর্থবছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি প্রবাসী আয় আসবে।
