জুলাই মাসে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ ৩২৫০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায়ী অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ ঋণাত্মক ছিল। তবে চলতি অর্থবছরের শুরুতে নিট বিনিয়োগ ইতিবাচক ধারায় ফিরছে। প্রথম মাস জুলাইয়ে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে সরকার। আগের বছরের একই মাসে যেখানে নিট বিক্রি ছিল মাত্র ৩৯৩ কোটি টাকা।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে ৭ হাজার ৮৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর বিপরীতে মুনাফা ও মূল বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৪ হাজার ৬১০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা; অর্থবছরের প্রথম মাসে এটা সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা ঠিক করছে সরকার; যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ১৭ হাজার কোটি টাকা কম। গত অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য ঠিক করা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৭ হাজার ১৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র জমা বা বিক্রি করেছিল। এর মধ্যে মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬২৫ কোটি ৩২ টাকা। সঞ্চয়পত্রের মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধের পর এ খাতে সরকারের নিট ঋণ ছিল ৩৯৩ কোটি ১১ লাখ টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) ১২ মাসে ৮০ হাজার ৮৫৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। এর বিপরীতে মুনাফা ও মূল বাবদ পরিশোধ করেছে ৮৪ হাজার ১৫৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ যে পরিমাণ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, তা দিয়ে গ্রাহকদের আগে বিনিয়োগ করা সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। উল্টো ৩ হাজার ২৯৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা সরকার কোষাগার ও ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করেছে।

এখন ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে রিটার্নের সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব রকম সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। তার আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ সীমা কমিয়ে আনা হয়। এছাড়া ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। দুর্নীতি বা কালো টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধে ক্রেতার তথ্যের একটি  ডেটাবেজ তৈরি হয়েছে।

বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৫২, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ৭৬, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ২৮, তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। কয়েক দফায় সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো হলেও এখনও তা ব্যাংকের তুলনায় বেশি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০