নিজস্ব প্রতিবেদক : অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় এবার পাসের হার বেড়েছে। পাস করেছে ৯৩ দশমিক ০৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। গত বছর এ পরীক্ষায় ৯২ দশমিক ৩৩ শতাংশ পাস করেছিল। একই সঙ্গে বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে পরীক্ষার ফলের অনুলিপি তুলে দেন। এ সময় শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরাও তার সঙ্গে ছিলেন। সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের পরীক্ষার ফল তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, জেএসসিতে এবার ৯২ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং মাদরাসা বোর্ডের অধীনে জেডিসিতে ৯৪ দশমিক ০২ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। সারা দেশে ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯৫৯ শিক্ষার্থী জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ২১ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ জন পাস করেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। ৯ হাজার ৪৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় গোল্ডেন-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। এ বছর মোট দুই লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৮ জন গোল্ডেন-৫ (সবগুলো বিষয়ে জিপিএ-৫) পেয়েছে। গত বছর এই সংখ?্যা ছিল এক লাখ ৯৬ হাজার ২৬৩ জন।
পাসের হারে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে রাজশাহী বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে কম। ৮৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী এ বোর্ড থেকে পাস করেছে। ঢাকা বোর্ডে ৯১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৯০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, বরিশালে ৯৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ, সিলেটে ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং দিনাজপুরে ৯২ দশমিক ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।
তবে ঢাকা বোর্ডে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৬ হাজার ৩৫০। আর মাদরাসা বোর্ডে পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৫২৯ জন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজš§কে আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলা এবং ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করা।’
‘ঢালাও পাসের সঙ্গে শিক্ষার গুণগত মান বাড়ছে না’ বলে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েদের মান বেড়েছে; কিন্তু বর্তমান যুগে আমাদের চাহিদা অনুসারে যে মান দরকার, বিশ্বমানের সমতা অর্জন করা দরকার, তার থেকে আমরা অনেক পেছনে আছি। সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছেলেমেয়েদের মান উন্নত করা। সেজন্য গুণগত মানসম্মত নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক দরকার, সেই চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এই পরীক্ষার গুরুত্ব তারাই উপলব্ধি করতে পারবেন, যারা বাংলাদেশকে বুঝতে পারেন। বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জে গরিব পরিবারের অর্থেক ছেলেমেয়েই স্কুলে আসতো না। পঞ্চম শ্রেণির আগে ৪৮ শতাংশ এবং নবম শ্রেণির পাসের আগে ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়তো।’
জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় এবার ৯ হাজার ৪৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব পরীক্ষার্থী পাস করেছে। তবে ২৮ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করতে পারেনি। গত বছর ৪৩ প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী ফেল করেছিল।