Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 5:06 pm

‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকলেও টানা বাড়ছে দর

নিজস্ব প্রতিবেদক: বছরের শেষ মাসে নিম্নমুখী বাজারে হাতে গোনা কিছু দুর্বল কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ছে। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে বিমা খাতের কোম্পানি প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সম্প্রতি ‘জেড’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর টানা বাড়ছে। ফলে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

তথ্যমতে, গতকাল বৃহস্পতিবার প্রোগ্রেসিভ লাইফের শেয়ার সর্বশেষ ৭২ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এদিন কোম্পানির শেয়ার ৭০ টাকা থেকে ৭২ টাকা ৭০ পয়সায় ওঠানামা করেছে। আগের দিনের চেয়ে কোম্পানির শেয়ারদর ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ বা ছয় টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এদিন কোম্পানির দর কমার সর্বনি¤œ সীমা ছিল ৫৯ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৭২ টাকা ৭০ পয়সা। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর কোম্পানির শেয়ারদর ৫২ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এর পর থেকে গত ৯ কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ২০ টাকা ৩০ পয়সা বা প্রায় ৩৯ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার গত এক বছরে সর্বনি¤œ ৪৬ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৭২ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

শেয়ারদর টানা বাড়ার বিষয়ে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা দীপেন কুমার সাহা রায় শেয়ার বিজকে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে কী কারণে দর বাড়ছে, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। ডিএসই থেকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিল, আমরা জবাব দিয়েছি।’

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মন্দা বাজারে কিছু অসাধু চক্র ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে মেতে ওঠে। এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বিনিয়োগকারীদের বেশি সচেতন থাকতে হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কমবে। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থারও খতিয়ে দেখা উচিত কী কারণে এসব কোম্পানির দর বাড়ছে। এর মাধ্যমে বাজারে স্বাভাবিক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন তারা।

জানা গেছে, কোম্পানিটি নিয়ে আদালতে পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের পাল্টাপাল্টি মামলা চলছে। এতে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেও দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তায় রয়েছে। মামলার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বার্ষিক সাধারণ সভা হচ্ছে না।

এজিএম সম্পর্কে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ‘আমরা আমাদের আইনজীবীর মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করার জন্য আদালতের অনুমোদন চাইতে আলোচনা করেছি। আদালত অনুমোদন দিলে এজিএম করা সম্ভব হবে।’

কোম্পানির লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১২ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করেছে। পরে মামলাসংক্রান্ত জটিলতা পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। এতে লভ্যাংশ প্রদান ও এজিএম করা হচ্ছে না। এতে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে প্রতিষ্ঠানটি।

পুঁজিবাজারে ২০০৬ সালে তালিকাভুক্ত প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অনুমোদিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা এক কোটি ২৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭৭৬টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৫৭ দশমিক ৬০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।