শেয়ার বিজ ডেস্ক: গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপের হুমকির জবাব দিতে গাড়ি নির্মাতা প্রধান দেশগুলো জোটবদ্ধ হচ্ছে। ট্রাম্প শুল্কারোপ করলে পাল্টা জবাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় একত্র হবে কানাডা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ), জাপান, মেক্সিকো ও দক্ষিণ কোরিয়া কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি জানিয়েছে। খবর রয়টার্স।
গত ২৩ মে গাড়ি আমদানি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি কি-না, তা খতিয়ে দেখতে দেশটির বাণিজ্য বিভাগকে নির্দেশ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিবেদনে গাড়ি আমদানি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতি হলে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি। এ হুমকি দেওয়ার পর দেশে-বিদেশের গাড়ি কোম্পানিগুলো, বিভিন্ন দেশ, এমনটি নিজ দেশেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের এ শুল্কে গাড়ির দাম বেড়ে যাবে। এতে গাড়ি বিক্রি কমে যাবে এবং এ শিল্পে কর্মসংস্থানও কমবে।
গত বছরও ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে জাতীয় স্বার্থের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ইস্পাতে ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়ামে ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। তদন্ত শুরুর ২৭০ দিন পর বাণিজ্য বিভাগ ট্রাম্পকে ওই প্রতিবেদন পেশ করে। আর আইন পাস করতে ট্রাম্পের সময় লাগে ৯০ দিন। চলতি সপ্তাহে তদন্ত কমিটি ট্রাম্পকে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশে জাতীয় স্বার্থের বিষয়ের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে উল্লিখিত দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ট্রাম্প শুল্কারোপ করলে গাড়ি নির্মাতা দেশগুলোর জবাব কী হবে, তা নির্ধারণে আগামীকাল ৩১ জুলাই জেনেভায় একত্র হবেন কয়েকটি দেশের উপমন্ত্রী। কানাডা ও মেক্সিকোর কয়েকজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, সহকারী অর্থমন্ত্রী জুয়ান কার্লোস বেকার জেনেভা যাচ্ছেন। তবে কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া কী আসতে পারেÑতা সহজেই অনুমান করা যায়। কারণ ইতোমধ্যে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানিতে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কারোপ করলে তার পাল্টা জবাব দেবে বলে জানিয়েছে মেক্সিকো, কানাডা ও ইইউ। দেশগুলো বলছে, তারা পাল্টা শুল্কারোপ করতে প্রস্তুত। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্য আমদানিতে ইতোমধ্যে পাল্টা শুল্কারোপ করেছে এ দুই ব্লক। ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদ নীতির আওতায় গত মার্চে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্য আমদানিতে শুল্কারোপের সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয় ১ জুন। এতে ইইউ, কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ঘনিষ্ঠ মিত্রদের বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্কারোপ করেছে ইইউ। ২৮০ কোটি ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যে আমদানি শুল্কারোপের সিদ্ধান্তটি ২২ জুন থেকে কার্যকর হয়। পাল্টা হিসেবে এক হাজার ২০০ ডলারের মার্কিন পণ্যে শুল্কারোপ করেছে কানাডাও।