নিজস্ব প্রতিবেদক: গাইবান্ধার অভিজ্ঞতার পর জেলা পরিষদের ভোটের প্রায় পুরোটা সময় ঢাকার নির্বাচন ভবনের মনিটরিং সেলে সিসিটিভির পর্দায় চোখ রেখে বসেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল; শেষ পর্যন্ত খুশি মনেই তিনি চেয়ার ছেড়েছেন। গতকাল সোমবার বেলা ২টায় ভোট শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসে সিইসি বলেন, ৫৭টি জেলা পরিষদের নির্বাচন হয়েছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। ভেতরে আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি, কোনো রকম অনিয়ম, সহিংসতা, গোলযোগ, গণ্ডগোলের তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। আমরাও দেখিনি, টেলিফোনেও যেসব সংবাদ পেয়েছি, ভোট সুন্দর ছিল, আমরা সন্তুষ্ট।
কেবল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ভোট দিতে পারেন বলে জেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটার থাকে কম। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরাই জেলা পরিষদে নির্বাচিত হন; কারণ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির তালিকায় তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এসব কারণে এ নির্বাচনে উত্তাপ ততটা থাকে না।
তারপরও নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ-আনসার মিলিয়ে ৭ জনকে নিয়োজিত করা হয়েছিল এ নির্বাচনে। গাইবান্ধা উপনির্বাচনের মতোই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ঢাকার মনিটরিং সেল থেকে সব জেলার ভোটের পরিস্থিতি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন সিইসি হাবিবুল আওয়াল। নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান ও মো. আলমগীর এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৪৬২টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য মিলিয়ে ৬৭১ জন জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে ভোটার ছিলেন সব মিলিয়ে ৬০ হাজার ৮৬৬ জন।
গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধায় বর্তমান ইসির অধীনে প্রথম ভোটে সিসি ক্যামেরায় ব্যাপক অনিয়মের চিত্র দেখে মাঝপথে ভোট বন্ধের সিদ্ধান্ত দেয় ইসি, যা নিয়ে নানামুখী আলোচনা তৈরি হয়। তবে সিইসি বলছেন, উপ-নির্বাচনে কঠোর হওয়ায় এবার জেলা পরিষদের ভোটে ‘গুরুতর অনিয়ম না হওয়ার মতো ইতিবাচক প্রভাব’ পড়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সোমবার ঢাকার নির্বাচন ভবনের মনিটরিং সেল থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে জেলা পরিষদের ভোটের পরিস্থিতি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন।
ভোট শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খলভাবে’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিসিটিভির মাধ্যমে ‘নতুন অভিজ্ঞতা’ হয়েছে নির্বাচন পরিচালনায়। আমাদের পর্যবেক্ষণটা আরও সমৃদ্ধ করেছি, নিঃসন্দেহে আমার সহকর্মীরাও সন্তুষ্ট। আগামীতে সবাইকে আরও ভালো সুযোগ করে দেবে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের; কারণ আমরা স্বচ্ছ সুন্দর নির্বাচন চাই।
সবার ভোটাধিকার নিশ্চিতের বিষয়ে ইসি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেÑজানিয়ে সিইসি বলেন, আজ আপনারা দেখেছেন, ভোট কক্ষে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি যাননি। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে যারা ভোটার, তারা ভোট দিয়েছেন। ভোটার সংখ্যা কম এখানে; দেখে সবাইকে ভদ্র, মার্জিত মনে হয়েছে। জেলা পরিষদে ৬০ হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধি ভোট দিয়েছেন। কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়া সবাই ভালো করে ভোট দিতে পেরেছেন।