নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে ১০টি করে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ও কিডনি ডায়ালাইসিসের বেড থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা জেলা হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য ১০টি বেড থাকবে, আর ১০টি থাকবে আইসিইউয়ের জন্য। এটার নির্মাণকাজ শুরু হয়ে গেছে। আটটি বিভাগীয় হাসপাতালে ক্যানসার, কিডনি ও হার্টের চিকিৎসা যাতে হয়, তার নির্মাণকাজ শুরু হয়ে গেছে। এখন আমরা লোকবল নিয়োগের ব্যবস্থা করছি।’
গতকাল জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রুস্তম আলী কিডনি ডায়ালাইসিসের মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা কম খরচে সরকারি হাসপাতালে করার ব্যবস্থা করতে আগামী অর্থবছরে বাজেট বৃদ্ধি করা হবে কি না জানতে চান প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই চিন্তা আমাদের রয়েছে। কারণ কিডনি ডায়ালাইসিসে অনেক খরচ হয়। সরকারিভাবে এ চিকিৎসা খুব অল্প টাকায় দেয়া হয়। বেসরকারিভাবে এই চিকিৎসায় বেশি টাকা দিতে হয়, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
তিনি বলেন, ‘শুধু হাসপাতালে গেলেই হবে না। ডায়ালাইসিস করার মতো প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলও দরকার। জেলা পর্যায়ে স্বল্প টাকায় ডায়ালাইসিসের সুযোগ পেতে পারে, সেই ব্যবস্থাটা করে দিচ্ছি। তাছাড়া হতদরিদ্রদের ক্যানসার ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জন্য একটি থোক বরাদ্দ আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফান্ড আছে, যেখানে হতদরিদ্ররা আর্থিক সহায়তা পায়।’
চিকিৎসা দেয়ার সময় ডাক্তারদের খেয়াল রাখার দরকার বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আদৌ কিডনি রোগ হলো কি না, তা ভালো করে
পরীক্ষা করা দরকার। এ ব্যাপারে সচেতনতাও সৃষ্টি করা প্রয়োজন। কী কী করলে কিডনি রোগ থেকে দূরে থাকা যেতে পারে, সেই প্রচারটাও হওয়া দরকার। প্রচার করা হচ্ছে, তবে আরও ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে নেয়া দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের অধিকার সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট সচেতন। বিশেষায়িত অসুখের চিকিৎসার জন্য ধীরে ধীরে সক্ষমতা অর্জন করছি। এর জন্য বাজেটে ভালো টাকা দেয়া হয়। সংসদ সদস্য নিজে ডাক্তার, তিনি কি এখনও বিনা পয়সায় রোগী দেখেন, নাকি শুধু এমপিগিরিই করেন, সেটাও মাঝে মাঝে বললে একটু ভালো হয়।’
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী তার প্রশ্নে বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম জার্মানি থেকে বাংলাদেশে বেশি। কিন্তু সেখানে শ্রমিকের বেতন আমাদের চেয়েও ২৩ গুণ বেশি। মালয়েশিয়ায় তেলের দাম কম, কিন্তু শ্রমিকের বেতন ১০-১২ গুণ বেশি।’ তিনি আরও এক কোটি মানুষকে কার্ড দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আজকেই খবর নেব জার্মানিতে পেঁয়াজের দাম কত? বাংলাদেশের চেয়েও কমÑমোটেই হতে পারে না। ইউরোপে কোনো জিনিসের দাম আমাদের চেয়েও কম, তা আমি বিশ্বাস করি না। মনে হয়, তথ্যটা তিনি না জেনেই বলেছেন। যখনই আমরা পেঁয়াজ দিতে শুরু করি, তখন খাতুনগঞ্জের আড়ত থেকে পেঁয়াজ কেনার লোক পাচ্ছে না।’ পরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জার্মানিতে পেঁয়াজের দাম দশমিক ৯৬ ইউরো। এক ইউরো সমান ১০০ টাকা। চার পয়েন্ট বাদ দিলে কত হয়? আর এখানে পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, টিসিবিতে ২০ টাকায় কেজি। জার্মানি থেকে এখানে পেঁয়াজের দাম বেশি।’