Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 5:22 pm

জোয়ারের কারণে খাতুনগঞ্জে দোকানে হাঁটু পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: ভারী বৃষ্টিপাত ছাড়াই বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে দেশে ভোগ্যপণ্যের প্রধান মোকাম বন্দরনগরী চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের নি¤œাঞ্চল। শুধু এবার নয়, প্রতিবছর কয়েকবার জোয়ারের পানিতে ডুবছে। গতকাল জোয়ারের পানিতে ডুবেছে খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ ও চাক্তাই এলাকার অনেক দোকান ও মোকাম। এতে ব্যাহত হচ্ছে বিক্রয় কার্যক্রম। আর নষ্ট হচ্ছে পচনশীল পণ্য। অপ্রত্যাশিত লোকসান গুনতে হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের। কিন্তু বছরের পর বছর এ সমস্যার সমাধান হয় না।

সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল জোয়ারের পানিতে চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আমিন মার্কেট, সোনামিয়া মার্কেট, চাঁন্দ মিয়া লেন, হামিদুল্লাহ মার্কেট, পোড়াভিটা, চালপট্টি, শুঁটকিপট্টি, আছদগঞ্জ, চর চাক্তাইসহ বিভিন্ন নিচু এলাকা হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। শুধু গতকাল নয়, আগের দিনও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল এসব এলাকার শতাধিক দোকান। অথচ কোনো বৃষ্টিপাত ছিল না। আর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে এসব এলাকার ব্যবসায়ীর ভোগ্যপণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পণ্য নষ্ট হওয়ার বিক্রির ওপরও প্রভাব পড়ছে অনেক। কারণ পানি জমে থাকায় ক্রেতারা মালামাল কিনতে আসসেন না। অন্যদিকে ঈদের ছুটির প্রভাবে লেনদেন সময় কম। ফলে সবমিলিয়ে চাপে আছেন এসব এলাকার ব্যবসায়ীরা।

দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খ্যাত খাতুনগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ীরা বলেন, শুধু জোয়ারের পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ থেকে অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রতি বছরই ব্যবসায়ীরা দোকান ও গুদামের প্রবেশমুখ উঁচু করেন। কিন্তু প্রত্যেক বছরই জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়ছে। ফলে অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়াতেও দোকান-গুদামে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে। অথচ দুই বছর আগেই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চাক্তাই ও রাজাখালী খালে সøুইসগেট নির্মাণকাজের উদ্বোধন করে। এখনও নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। অথচ এলাকার ব্যবসায়ীরা সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। তা সত্ত্বেও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির কোনো উদ্যোগ নেই বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন জানান, এত বেশি পানি আগে কোনো জোয়ারে উঠেনি। নিচু এলাকার মানুষ ঘরে বন্দি এখন।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন শেয়ার বিজকে বলেন, বৃষ্টি নেই। কিন্তু জোয়ারের পানিতে ডুবে যাচ্ছে আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি ব্যবসা কম হচ্ছে। জোয়ারের পানি জমে থাকায় ক্রেতা আসছে কম। আর পানি পরিষ্কার করতে অনেকক্ষণ সময় লাগছে। অথচ আমরা প্রতিবছর সরকারকে নানা খাতে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিই। কিন্তু আমাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। নানা কারণে খাতুনগঞ্জ এলাকার বেচাবিক্রিও অর্ধেকে নেমে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সিডিএ সøুইসগেট নির্মাণ কাজ শুরু করে; যা এখনও শেষ হয়নি। কাজে কোনো গতি নেই। এটা আমাদের জন্য বেদনাদায়ক। নগরবাসীর সমস্যা সমাধান সেবাপ্রদানকারী সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে এক টেবিলে কাজ করতে হবে। এটা কোনো বিকল্প নেই।