মো. সোহেল হোসাইন, বাউফল (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর বাউফলে টানা বৃষ্টি, তীব্র বাতাস ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে অনেক ইউনিয়নের মানুষ। উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ, কাচিপাড়া, নুরাইনপুরসহ অনেক ইউনিয়ন এখনও জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে। সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে এবং পানিবন্দি অবস্থায় আছেন বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন চন্দ্রদ্বীপের অসংখ্য মানুষ।
তেঁতুলিয়া নদীর অজস্র স্রোতে ডুবে গেছে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম। অনেকের শেষ সম্ভল ভিটে হারা ও ঘরবন্দি প্রায় এক হাজার পরিবার।
তীব্র বাতাস অনেক কৃষক ও জেলে পরিবারের বসত ঘর ভেঙে গেছে। উপার্জন বিমুখ হয়ে পড়েছেন অনেক জেলে পরিবার। কোনো মতে না খেয়ে ছেলে মেয়ে নিয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা।
ইউনিয়নের দক্ষিণ চরওয়াডেলের বাসিন্দা রহিম সিকদার, ছিদ্দিক গাজী, দুলাল ও হাসিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমাদের ঘরের মাটি নাই, নদীর স্রোতের তীব্রতা এত বেশি যে বসত ঘরের মাটি নিয়ে গেছে। সারারাত বসেই কাটাতে হয়। এ ভিটে ও ঘরটি ছাড়া দাঁড়ানোর মতো জায়গা নেই আমার। ছেলে মেয়ে নিয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে কাটছে আমাদের দিন।
ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ছালাম হাওলাদার বলেন, বর্ষার আগেই অকাল ভাঙনের কারণে নদী অনেক কাছে চলে এসেছে। গত কয়েক দিন ধরে নদীর তীব্রতা ও ঝড়ো বাতাসের কারণে পানির উচ্চতা বেড়ে আট ফুটেরও ওপরে উঠে গেছ। সেই কারণেই রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি স্কুল-মাদ্রাসা পানিতে তলিয়ে গেছে। অতি দুরবস্থায় কাটছে দক্ষিণ চরওয়াডেলের মানুষের জীবন যাপন। ইউনিয়নের চরকচুয়া, চর ব্যারেট, চররায়সাব ও চরমিয়াজান গ্রামের বাসিন্দারাও জানালেন তাদের দুরবস্থার কথা। জামাল বেপারী, শাহাদাত হোসেন, সামচেল চৌকিদারসহ দুঃখ দুর্দশার কথা জানালেন অনেক ভুক্তভোগী পরিবার।
ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, সাগরে নি¤œচাপ, লাগাতার কয়েক দিনের বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের কারণে বাউফল থেকে বিচ্ছিন্ন জনপদ চন্দ্রদ্বীপের সব মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কয়েকদিন ধরে বসতঘর থেকে বের হতে পারছেন না। এতে করে অনেক অসহায় মানুষকে খাবার সংকটও দেখা দিয়েছে। প্রবল জোয়ারের তীব্র স্রোত ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের মূল পাকা রাস্তা ভেঙে গেছে। পাকা রাস্তা যেহেতু ভেঙে গেছে সেহেতু কাঁচা রাস্তার কথা তো আর বলার অবকাশ রাখে না।
উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন এ ইউনিয়নে তীব্র বাতাসে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন অনেক জেলে পরিবার।