ঋতু পরিবর্তনসহ নানা কারণে অনেকেরই জ্বর হচ্ছে। জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, শরীরব্যথা, খাবারে অরুচিসহ নানা ধরনের উপসর্গ হতে পারে। জ্বরের ধরন, অন্যান্য উপসর্গ ও র্যাশের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে রোগ সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব।
ডেঙ্গু: বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। এতে তীব্র জ্বরের সঙ্গে মাথা, চোখের পেছনে ও শরীরে ব্যথা থাকে। এর পাশাপাশি চামড়ায় ছোট ছোট লালচে র্যাশ বা দানা দেখা দিতে পারে।
হাম: শিশুদের হাম বেশি হয়। যেকোনো বয়সের মানুষের এটি হতে পারে। হাম সাধারণত একবার হলে আবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। সর্দি-কাশি, চোখের লালচে ভাব প্রভৃতি উপসর্গের সঙ্গে জ্বরের তিন-চার দিন পর ছোট ছোট লালচে দানা ওঠে, যা মুখ-গলা থেকে শুরু করে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
জলবসন্ত: ভেরিশেলা জোস্টার নামের ভাইরাসের কারণে চিকেন পক্স বা জলবসন্ত হয়। যেকোনো বয়সের মানুষের এটা হতে পারে। এতে জ্বর, মাথা ও শরীরে ব্যথা শুরু হওয়ার এক থেকে দুই দিন পর ব্রণের মতো ফুসকুড়ি বা দানা দেখা যায়, সঙ্গে চুলকানি থাকে। সাধারণত চার-পাঁচ দিনের মধ্যে ফুসকুড়িগুলো শুকিয়ে যায়।
টাইফয়েড: দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। প্রথম চার-পাঁচ দিন পর জ্বরের তীব্রতা বাড়তে থাকে; সঙ্গে মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া ও বমি হয়। জ্বরের ৭ থেকে ১০ দিন পর পেটে ও পিঠে লালচে র্যাশ দেখা দিতে পারে।
হারপিস জোস্টার: জলবসন্ত ভালো হয়ে যাওয়ার অনেক দিন পরও এর জীবাণু শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থেকে যেতে পারে।
ইনফেকশাস মনোনিউক্লিওসিস: ভাইরাসজনিত এই রোগ লালা, হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। জ্বর ও গলাব্যথার সঙ্গে শরীরে লালচে র্যাশ ওঠে, সঙ্গে লসিকাগ্রন্থিও বড় হতে পারে। এসব সংক্রামক রোগ ছাড়াও আরও অনেক কারণে জ্বরের সঙ্গে র্যাশ হতে পারে। জ্বরের সঙ্গে র্যাশ দেখা দিলে ত্বক পরিষ্কার ও আর্দ্র রাখতে হবে। এসব নখ দিয়ে চুলকানো বা খোঁচানো উচিত নয়। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।
ডা. ইসরাত জাবীন
সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন) গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা