নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্দোলন করার অধিকার সব রাজনৈতিক দলের থাকলেও জ্বালাও-পোড়াওয়ের অধিকার যে কারও নেই, সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ‘জ্বালাও-পোড়াওয়ের অধিকার রয়েছে বলে জাতিসংঘ বলেছেÑএটা আমি মনে করি না। জাতিসংঘ এটা বলেনি। আন্দোলন করার অধিকার আছে। সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে। আমার পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে, সেই অধিকার সবার আছে। কিন্তু সেটা মানে এই নয় যে, গাড়িঘোড়া পোড়ানো। এটিকে কেউ সমর্থন করেনি।’
গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘের বিবৃতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
ঢাকার নয়াপল্টনে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। থেমে থেমে এ সংঘর্ষ কাকরাইল থেকে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দলটির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। সহিংসতা কাকরাইল, নয়াপল্টন থেকে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়।
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সহিংসতায় ক্ষমতাসীনদেরও জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়। তবে ওই বিবৃতিতে ‘তথ্যের ঘাটতি’ দেখার কথা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনেক সদস্য অবরোধের নামে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াওয়ের নিন্দা করেছেন। বিএনপি নানাভাবে অনেককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ড কেউ সমর্থন করেনি, করতে পারে না।’
অবরোধের ঘোষিত সময়ের আগেও সন্ধ্যার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটছে। সে প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না। এগুলোকে শুধু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বললে কম হবে। মানুষের সহায়-সম্পত্তিতে চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে। একটি গাড়ি পোড়ানো মানে একটি পরিবারকে পুড়িয়ে দেয়া।’
‘চোরাগোপ্তা হামলার’ সমালোচনা করে হাছান বলেন, ‘যারা রাজনীতি করেন তারা এ কাজ করতে পারেন না। তারা রাস্তায় নেমে এসে ব্যারিকেড দিক, মানুষকে বলুকÑআমরা অবরোধ ডেকেছি, আপনারা পালন করুন; সেটি তো তারা করে না।’
মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের কারণে সামুদ্রিক বাণিজ্যের দুয়ার ও সম্ভাবনা খুলে গেছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেখানকার পুরো এলাকা বদলে গেছে। কক্সবাজার শহর বদলে গেছে। এভাবে দেশের প্রতিটি শহর ও গ্রাম বদলে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এই উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, তখন দেশ ধ্বংসের জন্য পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে জনগণের ওপর। তারা কোনো উন্নয়ন দেখতে পান না। এই ধ্বংস ও পেট্রোল বোমার বিরুদ্ধে সবাই মিলে সোচ্চার হলে আমি মনে করি এগুলো বন্ধ হবে।’