জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সৌদি আরব

শেয়ার বিজ ডেস্ক: এশিয়ার বাজারে জুলাইয়ে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। এরপরই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। অথচ চলতি সপ্তাহে তেলের দাম কমানোর জন্য সৌদি আরবে সফরে যাওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। খবর: রয়টার্স।

ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯১ সেন্ট বা শূন্য দশমিক আট শতাংশ বেড়ে ১২০ দশমিক ৬৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রুড তেলের দাম ৯৩ সেন্টস বা শূন্য দশমিক আট শতাংশ বেড়ে ১১৯ দশমিক ৮০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। সৌদি আরব এশিয়ায় আরব লাইট ক্রুডের অফিসিয়াল বিক্রয় মূল্য জুনে ৪ দশমিক ৪০ ডলার প্রিমিয়াম থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ ডলার প্রিমিয়াম করেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় তেল উৎপাদনকারী কোম্পানি আরামকো এ তথ্য জানিয়েছে।

আগামী দুই মাসের মধ্যে তেলের উৎপাদন বাড়াতে রাজি হয়েছে তেল রপ্তানিকারকদের সংগঠন ওপেক। গত সপ্তাহে উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। তারপরও দাম বাড়ার খবর এলো। জুলাই থেকে আগস্টে দৈনিক উৎপাদন ছয় লাখ ৪৮ হাজার ব্যারেল বাড়ানোর কথা জানিয়েছে ওপেক, যা আগের পরিকল্পনার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। ইরাকও তেলের উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। দেশটি জুলাইয়ে দৈনিক চার লাখ ব্যারেলের বেশি তেল উৎপাদন করবে বলে জানায়।

সৌদি আরবের এ ঘোষণায় হতবাক এশিয়ার তেল বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। তেলের দামের এক উল্লম্ফন অপ্রত্যাশিত। এ সিদ্ধান্তে বিস্ময় জানিয়েছে অনেক ট্রেডার। সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি সৌদি আরামকো গত রোববার রাতে ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগরের ক্রেতাদের জন্যও তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে বলে জানায় আরামকো। চাহিদার চেয়ে তেল ও গ্যাসের সরবরাহ কম হওয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বিশ্বে জ্বালানির দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় জ্বালানির বিকল্প খুঁজতে বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখনই দাম বাড়ানোর এ ঘোষণা দিল সৌদি আরামকো।

এদিকে ভেনেজুয়েলার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দুটি কোম্পানিকে ভেনেজুয়েলার তেল ইউরোপে সরবরাহের অনুমোদন দেবে দেশটি। অথচ দুই বছর আগে তারা ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ইতালীর তেল কোম্পানি এনি এসপিএ ও স্পেনের রেপসোল এসএ আগামী মাসের মধ্যেই ভেনেজুয়েলার তেল ইউরোপে পাঠানো শুরু করতে পারে। এজন্য ভেনেজুয়েলা নগদ অর্থ পাবে না। ঋণ পরিশোধ করার জন্য তারা তেল দেবে। তবে এনি ও রেপসোল যে পরিমাণ তেল পাবে, সেই অঙ্কও বড় নয় বলে জানা গেছে। বিশ্ববাজারে তেলের দামে এর তেমন প্রভাব পড়বে না। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ভেনেজুয়েলার তেলের আবার ইউরোপ যাত্রার পথ সুগম হওয়া নিঃসন্দেহে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর জন্য সুখবর।

জেপি মরগানের বিশ্লেষকরা এক বিবৃতিতে জানান, হাতেগোনা কয়েকটি দেশ উৎপাদন বাড়াতে পারবে। আমরা আশা করছি, ওপেকভুক্ত দেশগুলো জুলাইয়ে প্রতিদিন ১ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন করতে পারবে, যা আগস্টে গিয়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেলে।

গতকাল বার্কলেস তাদের পূর্বাভাসে জানায়, ২০২২ ও ২০২৩ সালে ব্যারেলপ্রতি যথাক্রমে ১১ ও ২৩ ডলার বাড়তে পারে তেলের দাম। রাশিয়ার ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের দাম বাড়তি থাকবে বলে মনে করে সংস্থাটি। তবে তেলের বাজার ধরে রাখতে উৎপাদন বাড়িয়েছে রাশিয়া। দেশটির অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে বেড়েছে ৫ শতাংশ। এ সময় রুশ তেল উৎপাদিত হয়েছে ৪৩ দশমিক ১ মিলিয়ন টন। তবে গত বছর মে মাসের তুলনায় এবার উৎপাদন কমেছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০