নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল আজহার ছুটি ও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তাপমাত্রা ও বিদ্যুৎ চাহিদা বেশ কম ছিল। এতে মোটামুটি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে সরকার। তবে গত দুদিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, ঈদের ছুটি শেষে মানুষের কর্মস্থলে ফেরা ও বৃষ্টির প্রবণতা কমায় আবারও বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। যদিও জ্বালানি সংকটে সে অনুপাতে বিদ্যুৎ দিতে পারছে না বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এতে আবারও চোখ রাঙাচ্ছে লোডশেডিং।
৯ ও ১০ জুলাই বিকাল ৫টা পর্যন্ত তথ্য পর্যালোচনা করে লোডশেডিংয়ের ঊর্ধ্বমুখী চিত্রই পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টায় সর্বোচ্চ এক হাজার ৬০৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। ওই সময় চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার ১১ দশমিক ২২ শতাংশ লোডশেডিং হয়। আর ১০ জুলাই রাত ৩টায় সর্বোচ্চ দুই হাজার ১৩ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। ওই সময় চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ১০৫ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার ১৫ দশমিক ৩১ শতাংশ লোডশেডিং হয়।
যদিও গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং ছিল। সূত্র জানায়, গত ৯ জুলাই বেলা ২টা পর্যন্ত লোডশেডিং হাজার মেগাওয়াটের নিচে ছিল। ওই সময় ৮৬১ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। বেলা ৩টায় তা বেড়ে হয় এক হাজার ১৫১ মেগাওয়াট। ওই সময় চাহিদার আট দশমিক ৬৯ শতাংশ লোডশেডিং ছিল। বিকাল ৫টার পর তা আবার হাজার মেগাওয়াটের নিচে নামে। তবে রাত ১০টায় তা আবার হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়।
রাত ১২টায় সর্বোচ্চ লোডশেডিংয়ের পরের ঘণ্টাগুলোয় তা আরও বৃদ্ধি পায়। ভোর ৬টার পর লোডশেডিং এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের নিচে নামে। তবে দিনের মধ্যে বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ এক হাজার ৪০১ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়, যা ছিল ওই সময়ের চাহিদা ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ। যদিও বিকাল ৫টার পর তা অনেকটা কমে যায়।
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানি সংকটে ১২-১৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎও এখন উৎপাদন করা যাচ্ছে না। বেশকিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ পড়ে আছে। ফলে লোডশেডিং পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। তাপমাত্রা কমলে চাহিদা কমে এতে লোডশেডিং বন্ধ হয়। আবার তাপমাত্রা বেড়ে গেলে লোডশেডিং ফিরে আসে।
সূত্র জানায়, গত ৯ জুলাই গ্যাস সংকটে ১৭টি ও ফার্নেস অয়েল সংকটে ৩৬টি কেন্দ্র পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ ছিল। এছাড়া কয়লা সংকটে আবারও বন্ধ হয়ে গেছে বরিশাল ৩০৭ মেগাওয়াট কেন্দ্রটি। আর রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও চালু হয়নি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। আবার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ পায়রার একটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭ জুন বিকাল ৪টায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তিন হাজার ৪১৯ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। এর আগে সর্বোচ্চ লোডশেডিং ছিল ৬ জুন বিকাল ৪টায় তিন হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট, ৫ জুন রাত ১টায় তিন হাজার ২১৫ মেগাওয়াট ও ৩ জুন রাত ১২টায় তিন হাজার ৮১ মেগাওয়াট।