নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার পরিবর্তনের হুমকি দিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের জবাব দিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিদিনই বলছেন, সময় শেষ। জানতে চাই, সময়টা কত, কয়দিন আর সময় পাব? দিনক্ষণটা একটু বলুন।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, কবে সময় শেষ, আর নাকি সময় দেবেন না, তো বলেন না কেন, ক্ষণ-তারিখ বলেন। সময় বলেন, আমরাও একটু তৈরি হই কীভাবে ঝড় আসেÑঠাকুরগাঁও থেকে আসে, না লন্ডন থেকে আসে।’
গতকাল শনিবার ঢাকার রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী ওলামা লীগের প্রথম সম্মেলনে একথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।
শুক্রবার রাজধানীর শ্যামলী ক্লাব মাঠে এক সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী আজকে যতই চিল্লাচিল্লি করেন, যতই জাপান, যুক্তরাজ্য, আমেরিকা আর সৌদি আরব, কাতার, চীনে যানÑকোনো লাভ হবে না। সময় শেষ, এটাই বাস্তবতা।’
তার আগে এক সমাবেশে তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, সামনে রাজনৈতিক ঝড় আসছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১০ বছর ধরে শুনতে পাচ্ছি, সরকারের সময় শেষ। এই সরকারের সময়, এই সরকারের সময় কত এটা জানেন মহান সৃষ্টিকর্তা, এই সরকারের সময় কত এটা জানে এই দেশের জনগণ। এই সরকারের সময় পরিবর্তন হবে কি না, সেটা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ এবং আল্লাহ পাক।’
তিনি বলেন, ‘তীব্র বেগে নাকি ঝড় আসছে, সেই ঝড় শেখ হাসিনার গদি উল্টে দেবে। কত নম্বর বিপদ সংকেত সেটা বলেনি। এই ঝড়ের কথা শুনতে আছি ১০ বছর ধরে। ১০ বছর ধরে শুনছি, আর সময় নেই, আর সরকারের সময় নেই। দেখতে দেখতে ১৪ বছরÑঝড় হবে কোন বছর? দেখতে দেখতে ১৪ বছর, সরকার যাবে কোন বছর? ‘মির্জা ফখরুলকে আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই, মোখা সাইক্লোন কয় দিন আগে গেছে, আল্লায় যারে বাঁচায়, কেউ তারে মারতে পারে? বাংলাদেশকে আল্লায়ই বাঁচিয়ে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ভাগ্যবতী, আল্লার ইমানদার বান্দা এবং সেজন্যই বাংলাদেশে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মধ্যেও তেমন ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি।’
মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘শোনেন… ফখরুল সাহেব, এত হল্লাচিল্লা করে ৫২ দল, ৫৪ দল, ২৭ দফা, ১০ দফা, বিক্ষোভ সমাবেশ, তারপরে পদযাত্রা, তারপরে অবস্থান, তারপরে মানববন্ধনÑএকে একে কত কর্মসূচি দিলেন, কী হলো?
‘আপনাদের আন্দোলন এখন পথ হারিয়ে দিশাহারা পথিকের মতো। নানামুখী হাঁকডাক দিয়ে এখন পথিক পথহারা। প্রতিদিনই বৈঠক করে কর্মসূচি ঠিক করে, বারবার বসেও আন্দোলনের রূপরেখা এখনও ঠিক করতে পারেনি।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ঈমান ঠিক আছে। আওয়ামী লীগের শিকড় এই দেশের মাটির অনেক গভীরে, আওয়ামী লীগ কচুপাতার ওপর ভোরের শিশিরবিন্দু নয় যে টোকা লাগলে পড়ে যাবে। এ কথা যদি মনে করেন, ভুল করছেন।’
আওয়ামী লীগও আন্দোলনের মধ্যে আছে বলে জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে, আমরাও একটা আন্দোলনে আছি। বিএনপি আছে, সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে। আমরা আছি জনগণের জানমাল রক্ষার আন্দোলনে। জনগণের জানমাল রক্ষায় আমাদের আজ শান্তি সমাবেশ করতে হচ্ছে।
‘আমরা সন্ত্রাস চাই না, আমরা শান্তি চাই। আমরা সাম্প্রদায়িকতা চাই না, আমরা চাই অসাম্প্রদায়িকতা, মানবতাবোধ, যে চেতনায় আজকে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুকন্যা স্বল্পোন্নত দেশকে আজ উন্নয়নশীল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছে।’