দেলোয়ার কবীর: রোগীদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হাসপাতালটির লক্ষ্য। ২৪ শয্যাবিশিষ্ট ডায়াবেটিক হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি রোগীদের জীবনযাপন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। রোগীরা যেন সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করতে পারেন ও রোগ প্রতিরোধের উপায় জানতে পারেন, সে ব্যবস্থাও করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগী ও তার স্বজনরা এ হাসপাতালের চিকিৎসায় সন্তুষ্ট।
ওপরের চিত্রটি ঝিনাইদহ ডায়াবেটিক হাসপাতালের। সাধারণ মানুষের হাসপাতাল এটি। এখানের সেবা পেতে দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা আসেন। তাদের অধিকাংশই বয়স্ক। নারীদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
১৯৯৩ সালে ঝিনাইদহ পুরাতন মুন্সেফকোর্ট প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠিত হয় এই হাসপাতাল। শুরুতে শুধুু বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়ার লক্ষ্য ছিল তাদের। মানসম্মত সেবার কারণে রোগীর সংখ্যা ও চাহিদা বাড়তে থাকে। তাই পরবর্তী সময়ে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের ছোট কামারকুণ্ডু এলাকায় নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর করা হয় হাসপাতালটি।
ডায়াবেটিস ও সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাফি, ইলেকট্রকার্ডিওগ্রাফি, সার্জারি প্রভৃতি সেবা দেওয়া হয় এখানে। রয়েছে চক্ষুবিভাগও। সুষ্ঠু চিকিৎসা নিশ্চিত করতে অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে রোগী ও সাধারণ মানুষের জীবনাচরণ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও শৃঙ্খলাবোধ শেখানো হয়। কয়েক মাস পরপর মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ইন ডায়াবেটিস, এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড মেটাবলিক ডিসঅর্ডারস (বারডেম)-এর সহযোগিতায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করে তারা। এসব ক্যাম্প থেকে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর সংখ্যাও কম নয়।
চিকিৎসার জন্য এখানে আসা এক রোগী জানান, ঝিনাইদহ ডায়াবেটিক হাসপাতালের সেবার মান খুবই উন্নত। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কমে এখানে যাবতীয় চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের আন্তরিকতায় মুগ্ধ সব ধরনের রোগী। এ হাসপাতালে রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার বেশি।
ঝিনাইদহ ডায়াবেটিক হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম ফোটন বলেন, অটোএনালাইজার, ফোর কালার ডপলার, আধুনিক আলট্রাসনোগ্রাফি প্রভৃতির বেলায় আমাদের হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ তুলনামূলক কম। সেবার মান বৃদ্ধি ও কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। বারডেমের সমাজকল্যাণ বিভাগের সহযোগিতায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু ইনসুলিন ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়। তবে তা চাহিদার তুলনায় কম। অধিকতর উন্নত সেবার জন্য আরও কিছু যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
ঝিনাইদহ
Add Comment