Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 5:50 pm

ঝিনাইদহে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ জেলা শহরের পৌর এলাকায় হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত দুই দিন জেলা সদর হাসপাতালে দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের।

সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, গত বুধবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬০ রোগী। আর বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১১০ জন। তাদের বেশিরভাগ শহরের হামদহ, কাঞ্চনপুর ও মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

গতকাল সকালে সদর হাসপাতালের মেডিসিনি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বেড কিংবা মেঝে কোথাও নেই তিল ধারণের ঠাঁই। ভর্তি রোগীর পাশাপাশি প্রতিনিয়ত হাসপাতালে ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন রোগী। আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগই নারী ও বয়স্ক মানুষ।

আলহেরা পাড়া এলাকার জুয়েল নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘আমাদের ফ্যামিলিতি তিনজন অসুস্থ হয়েছেন। পরশুদিন রাতে ভর্তি করেছি। আমার বোন সুস্থ হয়েছে। বোনের বাচ্চা এখনও সুস্থ হয়নি। কয়দিন থাকা লাগবে তা তো বলতে পারছি না।’

খন্দকারপাড়া এলাকার সোনালী নামের এক রোগী বলেন, ‘হঠাৎ আমার মেয়ের পাতলা পায়খানা হয়েছে। তারপর ওর বাবার, পরে আমার। কেন হলো তা তো বলতি পারছি না। আমরা তো টিউবয়েলের পানি খাই। সাপ্লাইয়ের পানি দিয়ে গোসল আর রান্না করি। আমার শুধু একার নয়, আমার বাড়ির আশপাশের লোকজনেরও হয়েছে।’

চৈতি নামের এক রোগী বলেন, ‘স্যালাইনগুলো আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ওষুধও আমরা অনেক সময় পাচ্ছি না। অনেক রোগী। নার্সরাও সেবা দিতে পারছেন না ঠিকমতো।’

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যারা আসছেন তারা বয়স্ক। শিশুরা কম আক্রান্ত হচ্ছে। পৌরসভার একটি এলাকা থেকে রোগী বেশি আসছে। বেশিসংখ্যক রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের জনবল কম থাকার পরও আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি তাদের সেবা দিতে।’

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. জাকির হোসেন বলেন, ‘রোগীরা বেশিরভাগই একটি নির্দিষ্ট এলাকার। এতে আমরা ধারণা করছি, কোনো খাবার অথবা পানির মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। যারা আক্রান্ত হননি, তাদের প্রতি আমাদের পরামর্শ তারা যেন পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি পান করেন এবং বারবার হাত সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করেন। সেইসঙ্গে বাসি-পচা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘শিশুদের ডায়রিয়া আগের মতোই আছে, বয়স্ক মানুষের ডায়রিয়া হঠাৎ বেড়েছে। আমরা সব জায়গায় যোগাযোগ করেছি। আমাদের ওষুধ, স্যালাইন পর্যাপ্ত আছে। আমরা আশা করছি, এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব।’