ঝুঁকি বাড়াচ্ছে নতুন কোম্পানির শেয়ার

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠছে নতুন কোম্পানির শেয়ার। এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী কোনো বাছবিচার ছাড়াই শুরুতে অতিমূল্যায়িত করে ফেলছে এসব শেয়ার। যে কারণে দ্রুতই শেয়ারগুলোর মূল্য আয় অনুপাত বা পিই-রেশিও বেড়ে যাচ্ছে। অতিমূল্যায়িত হয়ে যাওয়ার কারণে বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর গড় মূল্য আয় অনুপাত ৪০-এর ওপরে অবস্থান করছে। যার জের ধরে বর্তমানে দুটি প্রতিষ্ঠানের মার্জিন সুবিধা বন্ধ রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, বর্তমানে তালিকাভুক্ত নতুন কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ৪৮ দশমিক ৪২। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী তালিকাভুক্ত অ্যান্ডভেন্ট ফার্মার পিই-রেশিও অবস্থান করছে ৫০ দশমিক ৯৯। ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের পিই-রেশিও রয়েছে ৫৫ দশমিক ৯৮ পয়েন্টে। অন্যদিকে ৪০-এর নিচে অবস্থান করছে শুধু কুইন সাউথ টেক্সটাইলের। এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত রয়েছে ৩৮ দশমিক ২৯।
নিয়মানুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের বিপরীতে প্রথম ৩০ দিন কোনো ঋণ সুবিধা থাকে না। একই সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শ্রেণি পরিবর্তন হলে ওই কোম্পানির শেয়ারের বিপরীতেও ৩০ দিন কোনো ঋণ সুবিধা মিলবে না।
বর্তমানে ‘এন’ ক্যাটেগরিতে থাকা অ্যান্ডভেন্ট ফার্মার পিই রেশিও ৪০ অতিক্রম করায় স্বাভাবিকভাবেই প্রতিষ্ঠানটির মার্জিন সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। অন্য কোম্পানি ইন্টাকো রিফুয়েলিং সম্প্রতি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারের বিপরীতে ঋণ পেতে এখনও এক সপ্তাহের বেশি অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এর আগেই শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ৪০ অতিক্রম করেছে। অর্থাৎ ৩০ কার্যদিবস পেরিয়ে গেলেও মার্জিন সুবিধার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই এই প্রতিষ্ঠানটির। অন্য কোম্পানি কুইন সাউথ টেক্সটাইলের পিই-রেশি ৪০ ছুঁই ছঁই। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের মার্জিন ঋণও বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, কোম্পানি নতুন হোক আর পুরোনো হোক এখানে বিনিয়োগের আগে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালো করে খোঁজ নিতে হবে। কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ভালো না হলে সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ঠিক না। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের পিই-রেশিওর দিকে নজর রাখা দরকার। এটা যত কম হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে ঝুঁকি তত কম হবে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করেন নতুন কোম্পানি বাজারে এলে বিনিয়োগকারীদের এই শেয়ারের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। কারণ তাদের ধারণা থাকে এসব কোম্পানি থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়া যাবে। সেই আশাতে শেয়ারদর বাড়তে থাকে। কারণ আগে রিটার্ন না দেওয়ায় নতুন কোনো প্রতিষ্ঠান শেয়ারহোল্ডারদের কতটা তুষ্ট করতে পারবে তা বোঝার উপায় থাকে না।
২০০৯ সালের ১ অক্টোবর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরুর প্রথম ৩০ কার্যদিবস ও ক্যাটেগরি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রথম ৩০ কার্যদিবস কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন ঋণ সুবিধা বন্ধ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জে নতুন তালিকাভুক্ত কোনো সিকিউরিটি ক্রয়ের জন্য তালিকাভুক্তির পর প্রথম ট্রেডিং দিবস থেকে ৩০তম ট্রেডিং দিবস পর্যন্ত কোনো মার্জিন ঋণ প্রদান করা যাবে না। পাশাপাশি কোনো কোম্পানির শেয়ারের ক্যাটেগরি পরিবর্তিত হলে নতুন ক্যাটেগরিতে লেনদেনের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১