Print Date & Time : 26 June 2025 Thursday 12:17 am

ঝুঁকি বিবেচনায় কৃষিতে প্রযুক্তির উন্নতি দরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মাথায় রেখে দেশের কৃষি খাতে আরও উন্নত প্রযুক্তি দরকার বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেছেন, প্রযুক্তির উন্নতি ছাড়া বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষিতে উন্নতি সম্ভব নয়।
গতকাল রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ডাল, তেলবীজ, ভুট্টা এবং অন্যান্য ফসলের আবাদ বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) ও অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (এসিআইএআর) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কেজিএফের নির্বাহী পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সবক্ষেত্রেই জয়বায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বিশাল চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষিতে এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের কৃষি ও কৃষকদের জলবায়ুর পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানসম্মত ধারণার আলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বিবেচনা করে দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের পানি, মাটির পুষ্টি ব্যবস্থাপনা, শস্য নিবিড়করণ ও যান্ত্রিকীকরণ প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাতে হবে।
এ সময় কৃষি গবেষণায় গুরুত্ব দিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, এসিআইএআর ও কেজিএফের যৌথ গবেষণা কার্যক্রমে দেশের টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রয়োজনীয় উপায় খুঁজে পাওয়া যাবে। এছাড়া খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাকে অধিকতর সুসংহত করতে গবেষণার নতুন নতুন দিগন্ত উšে§াচিত হবে। তিনি বলেন, খরা ও লবণসহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনে আরও গুরুত্ব দেওয়া দরকার। এজন্য তিনি বেশি বেশি গবেষণার তাগিদ দেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের কৃষি দিন দিনই উন্নত হচ্ছে। ফসলও বাড়ছে। গবেষণাও সমান তালে চলছে, নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন হচ্ছে। এখন অনেক শিক্ষিত লোকও কৃষিতে আসছেন। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। তিনি বলেন, এ কথাও ঠিক, কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা অনেক দেশ থেকে পিছিয়ে আছি। এর প্রধান কারণ হলো বেশিরভাগ কৃষকই সনাতন পদ্ধতির চাষাবাদে অভ্যস্ত। প্রযুক্তির প্রতি তাদের আকর্ষণ কম। এছাড়া বিদেশি যন্ত্রপাতির দামও বেশি, যা আমাদের কৃষকের জন্য ব্যয়সাপেক্ষ। তাই কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ঘটিয়ে কৃষির উৎপাদনশীলতায় ইতিবাচক ও টেকসই পরিবর্তন নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট এসিআইএআরের কর্মকৌশল ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, এসিআইএআর ১৯৯০ সাল থেকে কৃষি উন্নয়নের বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। ২০১৫ সাল থেকে সফলভাবে দক্ষিণাঞ্চলে পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শস্য নিবিড়করণ, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে মাটির পুষ্টি ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণশীল কৃষি ও লবণাক্তসহিষ্ণু ডাল, ভুট্টার জাত উন্নয়ন, সম্প্রসারণ কৃষি গবেষণার উৎকর্ষ সাধনে তিনটি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।