প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মাত্র কয়েক মিনিট সময়। টর্নেডোর তাণ্ডব লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। অনেক পরিবার হয়ে পড়েছে গৃহহীন।
গতকাল শনিবার সকাল সোয়া ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল এবং নাসিরনগর উপজেলা এলাকায় আঘাত হানে আকষ্মিক এ টর্নেডো। এতে ঘরবাড়ি উল্টে আহত অন্তত ১০ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সকালে আচমকা সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কুচনিবুড্ডা, নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া, বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর ও আশুরাইল গ্রামের ওপর দিয়ে টর্নেডো বয়ে যায়। নাসিরনগরের সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের কামারপাড়া, রিষিপাড়া, সোনাতলাপাড়া এবং বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল, শ্রীঘর গ্রামে টর্নেডোয় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কয়েক মিনিট স্থায়ী এই টর্নেডোর দাপটে গ্রামগুলোর অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উড়ে গেছে অনেক ঘরের চালা, নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বেড়া। অনেকের ঘরের চালা ঝুলে আছে উঁচু নারকেল গাছের মাথায়। টর্নেডোর তাণ্ডবে সড়কের গাছপালা, নদীতে থাকা বেশ কয়েকটি নৌকাও ভেঙে গেছে।
এদিকে টর্নেডোর আঘাতে আহত হয়ে নাসিরনগরের আশুরাইল গ্রামের মহরম মিয়া (৮০), সদর পশ্চিমপাড়ার মাজেদা খাতুন (১৭), নাজমুন ইসলামসহ (৯) আরও কয়েকজন নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়ে দুই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মো. মুসা জানান, ‘সকালে টর্নেডোর আঘাতে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কুচনিবুড্ডা গ্রামের অন্তত ১৬টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা আশরাফি বলেন, ‘গ্রাম ঘুরে সদরের ৫০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত দেখা গেছে। সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো ঘুরে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।