Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:25 am

টাইগারদের দাপুটে পারফরম্যান্সে হোয়াইটওয়াশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক: এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশের। তারপরও তামিম ইকবাল-সাকিব আল হাসানের মনে একটা অতৃপ্তি কাজ করছিল। সেটা নিশ্চয়ই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দেয়া। শেষ পর্যন্ত গতকাল সোমবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ব্যাটে-বলে দাপুটে পারফরম্যান্সে ১২০ রানে জিতে তারা সেটাই করে দেখিয়েছেন। ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ তে নিজেদের করে নিয়েছে টিম টাইগার্স।

গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ দাপট দেখান। তারা সবাই করেন হাফ সেঞ্চুরি। এর মধ্যে তামিম, মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক করেন সমান ৬৪ রান করে। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান। শেষ পর্যন্ত তাদের দাপুটে পারফরম্যান্সই ম্যাচে দুই দলের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। সিরিজের শেষ ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ করে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান।

পরে বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ রানে গুটিয়ে দেয় টিম টাইগার্স। ফলে বড় জয়ে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। শুধু তাই নয়, আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে তারা পেল আরও ১০ পয়েন্ট। এর সঙ্গে পয়েন্ট তালিকায় উঠে এলো দুই নম্বরে।

শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে বড় লক্ষ্য দিয়ে বল হাতে শুরুতেই জোড়া সাফল্য পায় বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরে যান কিওর্ন ওটলি ও সুনীল অ্যামব্রিসকে। দলীয় ৭ রানের মাথায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ওটলি। এর কিছুক্ষণ পরই অ্যামব্রিসকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন ফিজ। এদিকে দারুণ বোলিংয়ের পুরস্কার পেতে সময় লাগেনি মেহেদি হাসান মিরাজও। কাইল মেয়ার্সকে তিনি ফেরান এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে। সে সময় ৩ উইকেট ৪৭ রান তুলে ধুঁকছিলেন সফরকারীরা। ঠিক সে সময় বল হাতে নিয়েই জেসন মোহম্মদের বিপক্ষে এলবিডব্লিয়ের আবেদন করেন সাকিব। আম্পায়ার সাড়াও দিয়েছিলেন। কিন্তু সফরকারী অধিনায়ক রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান।

এরপর এ জুটি টাইগারদের জন্য কিছুটা হলেও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত ২৪তম ওভারে বল হাতে নিয়েই জেসন মোহাম্মদকে (১৭) উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচে ফিরিয়ে স্বাগতিক শিবিরে প্রাণ ফেরান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এর কিছুক্ষণ পরই এ পেসার ফেরান দারুণ খেলা বনারকে বোল্ড করে। তবে স্বাগতিকদের দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলেছেন সাকিব আল হাসান। এ তারকা ইনিংসের ৩০তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে পড়েন কুঁচকির চোটে। যে কারণে মাঠ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। তার অসমাপ্ত ওভার শেষ করেন সৌম্য সরকার।

এদিকে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই ক্যারিবীয় শিবিরে আঘাত করেন মিরাজ। এবার তিনি ফিরিয়ে দেন জামার হ্যামিল্টনকে কট বিহাইন্ড করে। তবে সফরকারীদের আশা বাঁচিয়ে রেখে ছিলেন রোভম্যান পাওয়েল। একপ্রান্ত আগলে রেখে তিনি গড়েছিলেন প্রতিরোধ। শেষ পর্যন্ত তার প্রতিরোধ ভাঙেন সৌম্য সরকার এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে। ফেরার আগে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান করেন ৪৭ রান। এর পরই দ্রুত সময়ের মধ্যে গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। আর তাই টাইগাররা পেয়ে যায় বড় জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৯৭/৬ (তামিম ৬৪, লিটন ০, শান্ত ২০, সাকিব ৫১, মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৪*, সৌম্য ৭, সাইফ ৫*; জোসেফ ১০-০-৪৮-২, হার্ডিং ১০-০-৮৮-০, মেয়ার্স ৭-০-৩৪-১, রিফার ১০-০-৬১-২, আকিল ১০-০-৪৬-০, জেসন ৩-০-১৬-০)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ (ওটলি ১, আমব্রিস ১৩, বনার ৩১, মেয়ার্স ১১, জেসন ১৭, পাওয়েল ৪৭, হ্যামিল্টন ৫, রিফার ২৭, জোসেফ ১১, আকিল ০, হার্ডিং ১*; সাইফ ৯-০-৫১-৩, মোস্তাফিজ ৬-০-২৪-২, তাসকিন ৮.২-১-৩২-১, মিরাজ ১০-২-১৮-২, সাকিব ৪.৫-০-১২-০, মাহমুদউল্লাহ ২-০-১১-০, সৌম্য ৩.১-০-২২-১, শান্ত ১-০-৪-০)

ফল: বাংলাদেশ ১২০ রানে জয়ী

সিরিজ: বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী

ম্যাচসেরা: মুশফিকুর রহিম

সিরিজ সেরা: সাকিব আল হাসান